প্রচ্ছদ

মঙ্গলবার ফ্রান্স যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ, ব্যাপক ও বহুমাত্রিক ফ্রান্স সফর আগামীকাল মঙ্গলবার শুরু হবে। ৯ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর দ্বিপক্ষীয় ও জাতিসংঘের অনুষ্ঠানসহ পিস কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করবেন তিনি। সফরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও প্রধান মন্ত্রী জাঁ ক্যাস্টেক্সের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এছাড়া ফরাসী সিনেটের প্রেসিডেন্ট জেরার্ড লার্চার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পারলে, এয়ারবাস ও থ্যালাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ হতে পারে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রীকে তিন জায়গায় গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। সফরে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকের পাশাপাশি নিরাপত্তা খাতে একটি লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

সফর বিষয়ে জানতে চাইলে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এবং আমরা আশা করি এই সফরের মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।’

এ ধরনের তাৎপর্যপূর্ণ সফর কম হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সর্ব্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের একাধিক বৈঠক হবে এবং আলোচনার বিষয়বস্তুর গভীরতা অনেক বেশি ও ব্যাপক হবে।’

কী কী থাকছে এই সফরে

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পাশাপাশি সিনেটের স্পিকার ও অন্যান্য মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এছাড়া, ফ্রান্সের বেশ কিছু কোম্পানির প্রধানসহ শীর্ষস্থানীয় ফরাসী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা মেডেফ-এর একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়েছেন। এর মধ্যে এয়ারবাস ও থ্যালাস রয়েছে।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও ইউনেস্কোর ৭৫-তম বার্ষিকী উদযাপন এবং সাবেক ফরাসি বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্যাসকেল ল্যামির আয়োজনে প্যারিস পিস ফোরাম অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।

এছাড়া, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ক্রিয়েটিভ পুরস্কার’ প্রথমবারের মতো দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সশরীরে যোগ দিয়ে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা তুলে দিতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ কী চায়

ফ্রান্সে ৯ নভেম্বর পৌঁছানোর পরপরই এলিসি প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠকের পরে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে, যেটি নিয়ে উভয়পক্ষ কাজ করছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত তালহা। তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং দুই দেশের সর্ব্বোচ্চ নেতৃত্বের মধ্যে সেটি রয়েছে। এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রীর প্রচুর অ্যাঙ্গেজমেন্টে আছে যা সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।’

তিনি জানান, বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের পর্যায়ে পৌঁছানো এবং এজন্য দরকার দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তি। এ দুটি বিষয়ে ফ্রান্স বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে পারে।

রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, জলবায়ূ পরিবর্তন, কানেক্টিভিটি, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে।

ফ্রান্সের চাওয়া

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী ফ্রান্স। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী বিক্রি করতে চায় দেশটি। ২০২০-এর প্রথমভাগে ওই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারলে ও বিমানবাহিনী বাহিনী প্রধান ফিলিপে লাভিগনে ঢাকা সফর করেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত বলেন, এধরনের সফরে সবকিছু নির্ধারিত হয় না তবে একটি দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক সম্পর্কের গভীরতা অনেক বেশি এবং আমরা এ সফরে ভালো ফলাফল আশা করছি।

আরো পড়ুন:

দেশে আরো বেশি বিনিয়োগের জন্য প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *