পর্যটন ও পরিবেশ

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কী এবং এটি কিভাবে কাজ করবে

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: “সারা বিশ্বজুড়ে যখন লাখ লাখ মানুষ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা পেতে ভ্যাকসিন নিচ্ছে, তখন শীর্ষ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ মনে করছেন একটি ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ চালু করলে দেশগুলো আবার সচল হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। এখন প্রশ্ন হলো- এই ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কি? সহজ কথায় এটি একজন ব্যক্তি ভ্যাকসিন নিয়েছে কিনা তা বোঝার একটি যাচাইযোগ্য দলিল। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই বিমান, জাহাজ ভ্রমণ বা কনসার্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যক্তির ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক করে দিচ্ছে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এগিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের এই অভিপ্রায় নিয়ে উঠেছে বৈজ্ঞানিক ও নৈতিক প্রশ্ন।”

আরও পড়ুন: বিলাইছড়ির দুমলং পর্বত : প্রাকৃতিক রূপলাবণ্যে অনন্য || দেখুন ভিডিও

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট শুরু করতে চাওয়ার কারণ কি?

এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও এয়ারলাইনসগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রমাণ দেখতে চায় যে যাত্রীরা করোনা আক্রান্ত নয়। কিন্তু স্থানভেদে এসব বিধিনিষেধ ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রতীয়মান হলেও, যাত্রীদের ভ্যাকসিন নিতেই হবে এমন কোনো নিয়মানুগ আবশ্যিক শর্ত কোথাও দেয়া হয়নি। সহজভাবে বলতে গেলে ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া ‘ইয়েলো কার্ড’ (অতীতের সকল টিকাদানের প্রমাণাদি সংযুক্ত বুকলেট) এর আধুনিক ও নিরাপদ রূপ। ভ্যাকসিন পাসপোর্ট থাকলে ব্যক্তির টিকা নেয়ার অবস্থা বুঝা যাবে এবং এর থেকে সীমান্ত প্রতিনিধি ও ভ্রমণসঙ্গীরাও নিশ্চিত হতে পারবেন করোনা সংক্রমণ না হওয়ার ব্যাপারে।

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কারা বানাবে?

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট তৈরির উদ্দেশ্যে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সরকারও কাজ শুরু করেছে। ‘ইনোভেট ইউ কে’র অর্থায়নে প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান এমভাইন ও আইপ্রুভ একটি কোভিড-১৯ ইমিউনিটি ও ভ্যাকসিন পাসপোর্ট পরীক্ষার জন্য লাইভ-টেস্টিং শুরু করে দিয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, কমন প্রজেক্টস এবং রকফেলার ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তারা সরকারি-বেসরকারি খাত মিলিয়ে ৫২টি দেশের ৩৫০ জনেরও বেশি নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা ‘কমনপাস’ নামক একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন।

গ্রিস ও সাইপ্রাসের মত পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি সার্টিফিকেট তৈরির কাজ করছে। এটি আগামী জুনের মধ্যে অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্য তাদের বর্তমান জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা অ্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে আরো একটি প্রজেক্ট তৈরির চেষ্টা করছে যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশের অনুমোদন পাবে বলে তাদের প্রত্যাশা।

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট তৈরির উদ্যোগ নেয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফ্রান্স। তাদের ইতিমধ্যেই একটি কোভিড চিহ্নিতকারী অ্যাপ রয়েছে যা তারা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কিছু ফ্লাইটে বসিয়েছে। ফ্রান্সের এই কার্যক্রম আগামী মে পর্যন্ত বর্ধিত করার কথা রয়েছে।

ইসরায়েল তাদের টিকা নেওয়া নাগরিকদের ‘গ্রিন পাসপোর্ট’ দিতে চেয়েছে। এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, তারা কোভিড পরীক্ষার ফলাফল ও টিকাদান তথ্যাদির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট প্রদান করার ব্যবস্থা নিতে ইচ্ছুক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তাদের বিমানগুলোতে তাদের নিজস্ব কোভিড চিহ্নিতকরণ অ্যাপ বসিয়েছে।

টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের আটকে দেয়া ব্যতীত আর কিভাবে সীমান্তে ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ কাজে লাগতে পারে?

টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট একটি স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং তাদেরকে বর্তমানে আরোপিত বিধিনিষেধের জালে পড়তে হবেনা। জানুয়ারির মাঝামাঝিতেই ডজনখানেক দেশের চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, টিকার পূর্ণাঙ্গ ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের যেন অন্তত ৬ মাসের জন্য মুক্তভাবে ভ্রমণ করতে দেয়া হয়।

সূত্র- ব্লুমবার্গ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *