আন্তর্জাতিকজাতীয়সর্বশেষ

ভোজ্যতেলের সঙ্গে ভোগ্যপণ্যের দামও বাড়ছে

ভোজ্যতেলের সঙ্গে ভোগ্যপণ্যের দামও বাড়ছে

সয়াবিন তেলের পর এবার ডলারের সঙ্গে টাকার তারতম্যের অজুহাতে ভোজ্যতেলের সঙ্গে ভোগ্যপণ্যের দামও বাড়ছে। টাকার তারতম্যের অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে আদা-রসুন-পেঁয়াজ-ডালসহ সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের দাম।

পাইকারি বাজারে কেজিতে রসুন ২৫ টাকা, আদা ৫ টাকা আর পেঁয়াজ ও ডাল বেড়েছে ৩ টাকা পর্যন্ত। আর মিল থেকে সরবরাহ না আসায় বাজারে মিলছেনা বোতলজাত সয়াবিন তেল।

খাতুনগঞ্জে বড় ড্রাম থেকে পাম্প করে টিনের পাত্রে তেল নেওয়ার চিত্র বলে দেয় বাজারে এখনো খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে অধিকাংশ দোকানে বোতলজাত তেল নেই বললেই চলে। তবে বাজারে বিক্রি হওয়া দরের চেয়ে সরকারের বাড়তি দর নির্ধারণ নিয়েও সাধারণ ব্যবসায়ীদের মনে জেগেছে প্রশ্ন।

চলতি বছরে এপ্রিল মাসে প্রতি মণ সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫ হাজার ৯২০ টাকা, যা কেজিতে ছিল ১৬০ টাকা। পাম অয়েলের দাম ছিল মণপ্রতি ৫ হাজার ২৯১ টাকা, যা কেজিপ্রতি ১৪৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মে মাসের শুরুতেই ঈদের আমেজ শেষ না হতেই সয়াবিন তেলের দাম মণপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩২৬ টাকা, যা কেজিতে ৩৮ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৮ টাকা। একইভাবে বেড়েছে পাম অয়েলের দাম। মণপ্রতি পাম অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৬৪ টাকা, কেজিপ্রতি দাম হয়েছে ১৭২ টাকা।

খাতুনগঞ্জ বাজারের মেসার্স আব্বাস সওদাগর স্টোরের ম্যানেজার জাফর আহমেদ বলেন, ‘তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে খরিদ্দার কম। আমরা সরকারি দরেই তেল বিক্রি করছি। তবে হঠাৎ করে তেলের দাম কেজিতে ৩৮ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা সংখ্যা কমে এসেছে।’

এদিকে ঈদের পর এসে অস্থির হয়ে উঠেছে ডালের বাজার। কেজিতে ২-৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সব ধরনের ডালের দাম। ডলারের বিপরীতে টাকার মান পড়ে যাওয়াই কারণ বলছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতিকেজি মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৪-৭৫ টাকা, মসুর ৯২-৯৩ টাকা, ছোলার ডাল ৬৪-৬৫ টাকা। গত সপ্তাহে কেজিপ্রতি মুগডাল বিক্রি হয়েছে ৬৯-৭০ টাকা, মসু ৮৯-৯০ টাকা ও ছোলার ডাল ৫৯-৬০ টাকা।

মেসার্স তৈয়বীয়া ট্রেডার্সের পরিচালক সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি সীমিত হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকে ৯২-৯৩ টাকায় আমাদের ডলার কিনতে হচ্ছে। কোনো কোনো ব্যাংকে ডলারের দাম ৯৪ টাকা। সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা তা আমার জানা নেই।’

এক সপ্তাহে রসুনের দাম কেজিতে ২৫ টাকা, আদা ৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৩ টাকা বেড়ে গেছে।

মেসার্স অছি উদ্দিন সওদাগর স্টোরের মালিক রুহুল আমিন রিগ্যান বলেন, ‘কৃষকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আইপি বন্ধ করে দেয়ায় পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম বেড়ে গেছে। এর মধ্যে আদা নিয়ে বন্দরে একটি জাহাজ আসার কথা থাকলেও, আসেনি। এতে আদার দাম কমার আপাতত সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে স্থিতিশীল থাকলেও ১৫ মে এর পর থেকে সরকার শুল্কহার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলে চিনি দামও বাড়বে বলে শংকা ব্যবসায়ীদের।

খাতুনগঞ্জে অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দর ওঠানামার কারণে বাজার কিছুটা ক্রেতাশূন্য। একের পর এক কারসাজি ও অজুহাতে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম। বাজার ঘুরে চোখে পড়েনি পর্যাপ্ত মনিটরিং ব্যবস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *