মাতৃভূমি

ভাষা আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিলেন নারীরাও

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম:  ৫২’র ভাষা আন্দোলন তথা রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রঞ্জিত হয় রাজপথ। বিশ্বের বুকে যা এক বিরল দৃষ্টান্ত। ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে পাকিস্তানি আর্মির বন্দুকের নল উপেক্ষা করে এগিয়ে এসেছিলেন নারীরাও। ভাষার দাবিতে পুরুষের পাশে নারীদের ছিল সমান অংশগ্রহণ।

২১শে ফেব্রুয়ারি আমতলার সমাবেশ থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মেয়েদের যে দলটি প্রথম বের হয় তার অগ্রভাগে ছিলেন রওশন আরা বাচ্চু ও ড. সুফিয়া আহম্মদ। ব্যারিকেড ভাঙে ভাষা কন্যারা। পুলিশের টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জে আহত হন রওশন আরা বাচ্চুসহ সুফিয়া ইব্রাহিম, সুরাইয়া ডলি, সারা তৈফুরসহ অনেক ভাষাকন্যা।

কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘রওশন আরা বাচ্চু ও ড. সুফিয়া ইব্রাহিমসহ অনেকে সেইদিন কারফিউ ভেঙে মিছিল নিয়ে এগিয়েছিলেন। তারা দ্রুত একটি শহীদ মিনার করেছিলেন, যা এখনো আমার মনে পড়ে। পরে জানতে পেরেছি প্রফেসর আনিসুজ্জামানের মা সেই শহীদ মিনারে দেখেছিলেন পুলিশ সেই শহীদ মিনার ভেঙে দিয়েছে। পরে তিনি তার গলার সোনার চেইন খুলে ওখানে রেখে এসেছিলেন এবং বলেছিলেন তোমরা এটা বিক্রি করে ইট, বালু কিনে আবার শহীদ মিনার বানাও।’

ঢাকার বাইরে যেসব ভাষা সৈনিক আন্দোলনে সরব ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম নারায়রগঞ্জের মমতাজ বেগম ও চট্টগ্রামের প্রতিভা মুৎসুদ্দি।

ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি বাঁকেই ছিল নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। আন্দোলনে কতটা গভীরভাবে জড়িয়ে ছিলেন নারীরা- তা ইতিহাসে ঠিকভাবে প্রকাশ পায়নি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সেলিনা হোসেন বলেন, ‘২২ ফেব্রুয়ারি যখন মিছিল যাচ্ছে, নারীরা বাড়ির ছাদ থেকে পুষ্প বর্ষণ করেছেন। যা মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলনকারীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য করা হয়েছিল বলে আমি মনে করি।’ ভাষা আন্দোলনে নারীর সম্পৃক্ততা স্বাধীকার আন্দোলনে বাঙালি নারীর অগ্রগতির বড় ধাপ বলেও মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *