নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: দেশের বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে আমদানি শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চাল আমদানির খবরে বাজারে চাল সরবরাহের পাশাপাশি কেজিতে দাম কমেছে ২ থেকে ৪ টাকা। চালের দাম কিছুটা কমায় নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
এদিকে, দেশের বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে ইতোমধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দিতে আমদানিকারকদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করেছে সরকার। আর আমদানির অনুমতি পেতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের আবেদনের হিড়িক পড়েছে।
ইতোমধ্যেই হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা কয়েক লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।
হিলি বাজারে দেখা গেছে, বাজারে সব দোকানেই চালের সরবরাহ ভালো রয়েছে। সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৪ টাকা করে কমেছে। আটাশ জাতের চাল বর্তমানে ৪৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ছিল। এছাড়া মিনিকেট জাতের চাল কমে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা ছিল।
হিলি বাজারের কয়েকজন চাল বিক্রেতা বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারত থেকে হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হচ্ছে। এমন খবরে অটোমিল মালিকরা মজুত করা চাল বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। ফলে আগে যে দামে কিনতাম তার চেয়ে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা করে কম দাম চাচ্ছে এবং চাল নিতে বলছেন। এ কারণে আমদানির খবরে বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৪ টাকা করে কমেছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ ও চাল আমদানিকারক মামুনুর রশীদ বলেন, কিছুদিন পূর্বেই বোরো মৌসুম শেষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের উৎপাদনও ভালো হওয়ায় বাজারে চালের সরবরাহ বেশী ছিল। এরপরেও চালের বাজারে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এতে করে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। ফলে নিম্নআয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। এ অবস্থায় বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় রয়েছে।
উল্লেখ্য, চাল আমদানির ক্ষেত্রে ৬২.৫ শতাংশ শুল্কহার বিদ্যমান ছিল। সম্প্রতি রেয়াতি হারে চাল আমদানির সুযোগ দিয়ে শুল্কহার কমিয়ে গত ১২ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। চাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একইসঙ্গে সমুদয় রেগুলেটরি ডিউটি থেকে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা বর্তমানে ভারত থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ বা এর একটু কম বেশি শুল্ক পরিশোধ করে চাল খালাস করে নিতে পারবেন।