নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: চীনের আবিষ্কৃত করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষা সংক্রান্ত অনুমোদন ঝুলে থাকার মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে আজ বুধবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ওই টিকার পরীক্ষার বিষয় থাকছে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা অফার করব, আমাদের এখানেও যদি ট্রায়ালের সুযোগ থাকে, অক্সফোর্ডেরটা, যেটা কাজ করতেছে, তাদের সঙ্গে আমরা লন্ডন মারফত যোগাযোগ করেছি।
আজ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে টিকা পরীক্ষার বিষয়েও আলোচনা হবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখন ইন্ডিয়ান বিভিন্ন ভ্যাকসিন প্রডিউসার, তারা এই মুহূর্তে ব্যবসায়িক দিকটা দেখছেন। সুতরাং আমাদের একটা প্রচেষ্টা আছে যে, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যেগুলো ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বা চালু হচ্ছে, সেগুলো পাওয়ার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে।
কোনো টিকার চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে বিপুল সংখ্যক মানুষের শরীরে প্রয়োগ করে তার ফলাফল দেখতে হয়। পরীক্ষায় নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হলেই সেই টিকা অনুমোদন পায়।
চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের করোনাভাইরাসের টিকা এখন তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া রাশিয়া প্রথম দেশ হিসেবে টিকা উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে।
এর মধ্যে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেড তাদের তৈরি করা টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা বাংলাদেশেও করার পরিকল্পনা করে। গত ১৮ জুলাই এই টিকা বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদনও দেয় বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল, বিএমআরসি।
ঘোষণা অনুযায়ী, এই টিকার বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজটি করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআর,বি। আগামী ১৮ মাস ধরে দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা রয়েছে।
তবে এখনও পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়নি। বিষয়টি নতুন হওয়ায় সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম এর আগে জানিয়েছিলেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কৃত টিকার পরীক্ষা ও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটি অফ ইন্ডিয়া (এসআইই)। দ্বিতীয় ধাপ থেকেই কোভিশিল্ড নামক টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে যাচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী এই সংস্থা।
এর মধ্যে মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা। তার সঙ্গে আজ দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন মাসুদ বিন মোমেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়টিরসহ অন্য টিকাগুলো যাতে বাংলাদেশ দ্রুত পেতে পারে, সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ।
তিনি বলেন, সেটা অ্যামেরিকানদেরটা হোক, অক্সফোর্ডেরটাই হোক- তারা ইন্ডিয়াতে ট্রায়াল দিচ্ছে, এগুলোর সবগুলো কীভাবে এক্সেস আমরা পেতে পারি, দ্রুত, সে ব্যাপারে সবার সাথে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছে, তো সেটার পার্ট হিসাবে তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ করব।
তিনি বলেন, আমরা আলাপ আলোচনা করব, আমরা কীভাবে সবার সাথে সহযোগিতা করতে পারি। সুতরাং আমাদের যেটা সবচেয়ে সেইফ মনে হবে বা সবচেয়ে বেশি ইউজফুল মনে হবে আমরা সেদিকেই যাব। সুতরাং সব অপশনই আমাদের জন্য থাকা উচিত।