ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

আগামী বছর থেকে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরীক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। অভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

দেশের বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের ইচ্ছেমতো শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নানা উদ্যোগ নিয়েও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাশ টেনে ধরতে পারেনি ইউজিসি। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ভর্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে ভর্তি হতে হবে। তারপর তাদের পছন্দ অনুযায়ী, চয়েস ফর্ম পূরণ করতে পারবে। একেবার অটোমেটিক সিস্টেমের মাধ্যমেই তারা ভর্তির সুযোগ পাবে।

কমিশন বলছে, মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি পরীক্ষা গ্রহণ করে মেধাতালিকায় ভিত্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্নের পর একই তালিকা থেকে শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে হবে।

ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির যেমন পদ্ধতি আছে যে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তারপর অপশন অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে পাবলিক বা প্রাইভেট মেডিকেল চয়েস দিতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও পাবলিক ও প্রাইভেটের পরীক্ষা একসঙ্গে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসা যায় কি না, সে ব্যাপারে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি বলছে, এতে মান নিশ্চিত করতে না পারলে প্রতিযোগিতায় টিকতে ব্যর্থ হয়ে শিক্ষার্থী হারাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, এ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী না-ও পেতে পারে। যেমন, বর্তমানে কেন্দ্রীয়ভাবে বণ্টনের কারণে কোনো কোনো কলেজ কিন্তু শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। সেটাই কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব হবে, মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া।

আর শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, একটি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি করলে জোর মনিটরিং না থাকলে ফলপ্রসূ হবে না এই সিদ্ধান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে যদি রাষ্ট্র থেকে তদারকি করা হয় এবং একটি মাত্র ফরম কিনে যদি একজন শিক্ষার্থী তাদের মেধা এবং পছন্দ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পায়, এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে তার পছন্দ এবং মেধার অবস্থান কোথায়।

সে অনুযায়ী যদি এটি নির্ধারণ করা যায়, তবে এটা অত্যন্ত যৌক্তিক হবে। শিক্ষার্থীদের অনেক ভোগান্তিও কমে যাবে। আর এভাবে উচ্চশিক্ষার গুণগত মানও আরও বাড়বে।

বর্তমানে দেশে ১১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *