প্রচ্ছদ

ব্রিটেনে হঠাৎ করেই কমেছে কোভিড সংক্রমণ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: দু’সপ্তাহ আগেও ডেল্টায় কাবু ছিল ব্রিটেন। সবচেয়ে বেশি টিকাকরণ হয়েছে যে দেশে, তার এই অবস্থা দেখে চিন্তা বাড়ছিল বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু এর পরেই চমক। সরকারি হিসেব দেখে হতবাক অনেকেই। ব্রিটেনে রাতারাতি কমে গিয়েছে দৈনিক সংক্রমণ! তবে কি অতিমারির শেষ? আশার আলো দেখছেন অনেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সম্প্রতি বলেছে, ডেল্টার পরে মিউটেশন ঘটিয়ে আরও ভয়ানক রূপ নিতে পারে ভাইরাস। কিন্তু ব্রিটেনে সংক্রমণ কমতে অনেকেই মনে করছেন, তবে কি অতিমারি এ বার শেষ হবে? কারণ, আগে এমনও শোনা গিয়েছে ডেল্টাই ভাইরাসের সর্বশেষ বিপজ্জনক মিউটেশন।

ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞদের কাছে অবশ্য এখনও এর স্পষ্ট উত্তর নেই। টিকাকরণের কামাল, নাকি এ-ও ভাইরাসের ভোলবদল, বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন’-এর অধ্যাপক মার্টিন ম্যাকি বলেন, ‘‘হঠাৎই ব্যাপক ভাবে কমে গিয়েছে সংক্রমণ। এটা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। এ রকম সত্যিই কেউ ভাবেনি।বিষয়টা রহস্যজনক!’’

১৭ জুলাই ব্রিটেনের দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৫৫ হাজার। গত সপ্তাহে সেটা কমে ২৫ হাজার হয়েছে। এখন আরও কম। এ প্রসঙ্গে ভারতের উদাহরণও টানছেন বিশেষজ্ঞেরা। ডেল্টার জেরে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল ভারতে। দৈনিক সংক্রমণ ৪ লক্ষ ছুঁয়েছিল। কিন্তু সেই সংক্রমণ হার কমে এখন দশ ভাগের এক ভাগও না।

‘ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল’-এর ভাইরোলজিস্ট ডেভিড ম্যাথিউসের বক্তব্য, এমন হতে পারে এর কারণ গোষ্ঠী সংক্রমণ। প্রায় সকলেই হয়তো ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমিত হয়েছেন। যার জন্য পুরো গোষ্ঠীর মধ্যে এর বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা (হার্ড ইমিউনিটি) তৈরি হয়ে গিয়েছে।

তবে একটি অন্য মতামতও পাওয়া যাচ্ছে। সেটি হল: পরীক্ষা কম হচ্ছে, তাই সংক্রমিতের সংখ্যা কমেছে। টিকাকরণের জোরে লোকজনের বাড়াবাড়ি কম হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমেছে। অল্পবয়সিরা বেশির ভাগই করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। সামান্য সর্দিজ্বর, ঠান্ডা লাগা বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। এটিকে ‘করোনা-পজিটিভ’-এর সংখ্যা কমার কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকে। ব্রিটেনে পরিস্থিতি কিছুটা শুধরোলেও আমেরিকায় ডেল্টা-আতঙ্ক জারি রয়েছে। নতুন করে মাস্ক পরা ও পারস্পরিক দূরত্ব-বিধির উপরে জোর দিচ্ছে তারা। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখতে লকডাউন শুরু হয়েছে। সিডনির রাস্তায় নামানো হয়েছে সেনা। অন্তত ৩০০ সেনা-পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। যাঁরা করোনা-পজিটিভ, তাঁরা বাড়িতে থাকলে আইসোলেটেড অবস্থায় থাকছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। ও দিকে, ব্রিসবেনে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে।

চীনেও নতুন করে শুরু হয়েছে লকডাউন। শুধু বেজিংয়েই দশ লক্ষের বেশি পরীক্ষা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *