ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জি-২০ বার্ষিক সম্মেলন। মহামারি পরবর্তী সময়ে এই সম্মেলনে বৈশ্বিক নেতারা জলবায়ু সংকটের পাশাপাশি দৃষ্টি দিচ্ছে করোনাসময়ে সৃষ্ট হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার দিকে। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সাপ্লাই চেইনকে শক্তিশালী করার দিকে জোর দিচ্ছে শীর্ষ দেশগুলোর নেতারা।
রোববার (৩১ অক্টোবর) ইতালির রোমে ১৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা কাটিয়ে ওঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান বৈশ্বিক নেতারা। কেবল সাপ্লাই চেইনের জায়গাটি স্বচ্ছ এবং সুব্যবস্থাসম্পন্ন হলেই ভবিষ্যতের মহামারি সংকট থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিকল্পিত দুর্যোগ কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে মনে করেন বৈশ্বিক নেতারা।
ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে সৃষ্ট হওয়া মূল্যস্ফীতির মূল কারণ হিসেবে পণ্য সরবারহের বিশৃঙ্খলাকে দুষছে দেশগুলোর নেতারা। সাইডলাইনে সাপ্লাই চেইনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য জি-২০’র এক বৈঠকে জো বাইডেন বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে এখনই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। বেসরকারি করপোরেশনগুলোকে আরও কার্যকর করা গেলে পণ্যজট এবং মূল্যস্ফীতি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাই এই শতাব্দীতে ঘটে যাওয়া শেষ মহামারি নয়। সামনের যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। করোনা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে কি করে একটি আকস্মিক মহামারি সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতির চাকাকে বিকল করে দিতে পারে। আমরা যতখানি পিছিয়ে পড়েছি সেখান থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে অনেক সময় লাগবে। যে কোনো ধরনের পরিকল্পিত সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও সম্মেলনটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, সিঙ্গাপুর ও স্পেনের নেতা ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে জানা যায়, বৈশ্বিক নেতারা একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে। তথ্য আদান-প্রদানে দেশগুলোর মধ্যে আরও স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে একমত হয় দেশগুলো। পণ্য সরবারহের ক্ষেত্রে কাঁচামাল আমদানি-রপ্তানি এবং তৈরি পণ্যের অবাধ সরবারহের দিকেও জোর দেওয়া হয়। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সার্বিক যোগাযোগ এবং সহজ বাণিজ্য একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা যায়।
এ ছাড়া নিজেদের মধ্যে অযথা অর্থনৈতিক অবরোধ নতুন করে সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা। বৈশ্বিক নেতারা প্রযুক্তিগত সাপ্লাই চেইনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ইস্যুতে বেশি জোর দিয়েছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া বেসরকারি ক্ষেত্রে নায্য শ্রমবাজারের বিকল্প নেই বলেও তারা একমত হয়।
আরো পড়ুন:
জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি নিরসনে দরকার বিশ্বনেতৃবৃন্দের কার্যকর ভূমিকা