‘আত্মসাৎকৃত টাকার গতিপথ শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত মামলার তদন্তকাজ শেষ করা সম্ভব না’ রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের মামলার তদন্ত নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের এমন বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলেছেন হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে আদালত এও বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে মামলার তদন্ত পরিচালনা করছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় ব্যাংকটির শান্তিনগর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করে দেওয়া রায়ে এ অভিমত এসেছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছর মার্চে এ রায় দিয়েছিলেন। সম্প্রতি রায়টি প্রকাশিত হয়েছে।
এ মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু কী হওয়া উচিত, তা নিয়েও অভিমত দেওয়া হয়েছে রায়ে। বলা হয়েছে, ‘এই মামলার তদন্তের মূল বিষয়বস্তু হওয়া উচিত সরকারি কর্মচারী অথবা ব্যাংকার হিসেবে আসামিদের দিয়ে ‘অপরাধমূলক অসদাচরণ’ সংঘটিত হয়েছে কিনা। আমাদের সুচিন্তিত অভিমত এই যে, অপরাধসমূহ প্রমাণে অর্থাৎ ‘আত্মসাতকৃত অর্থের গতিপথ সনাক্তকরণ’ আদৌ কোনো অপরিহার্য বা বাধ্যতামূলক শর্ত হতে পারে না। বর্তমান মামলাটি মানি লন্ডারিং আইনের অধীনে নয় যে, অর্থের গতিপথ নির্ধারণ অপরিহার্য বা বাধ্যতামূলক। দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারার অপরাধের ক্ষেত্রে আত্মসাৎকৃত অর্থ বা সম্পত্তি উদ্ধার মূখ্য কোনো বিষয় হতে পারে না।
উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য, সম্পূরক হলফনামা ও দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এ অভিমত দিয়েছেন আদালত।
তদন্ত নিয়ে কমিশনের বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর মামলার এজাহার দাখিল হলেও আজ পর্যন্ত প্রায় ছয় বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও কমিশন মামলার তদন্তকাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। টাকার গতিপথ সনাক্ত করতে পারেনি বলে তদন্তকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে উল্লেখ করে কমিশন দাবি করেছে, মামলার এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)’র নির্দেশনা অনুসরণ করছে।
আত্মসাৎকৃত টাকার গতিপথ শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত কমিশনের পক্ষে মামলার তদন্তকাজ শেষ করা সম্ভব না। আদালত ক্ষোভ, হতাশা ও দুঃখের সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছে যে, কমিশনের এহেন বক্তব্য আদালতের কাছে ‘বিভ্রান্তিকর’ মনে হয়েছে।
বিস্তারিত আসছে …