নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: আগস্টের দশ দিনে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য ল্যাবরেটরীর পাশাপাশি দৈনিক পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যাও বেড়েছে। দৈনিক সর্বোচ্চ পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে ল্যাবরেটরীর সংখ্যাও ৫৮টি বেড়ে গত ৯ আগস্ট তা ৭০৭টিতে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দৈনিক স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনিক পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দেশের করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে।আর এই বাস্তব চিত্র পর্যালোচনা করে সরকার সময়োপযোগী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, গত ৯ আগস্ট পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ৪৭ হাজার ২০৭টি ও মোট ল্যাবরেটরীর সংখ্যা ছিল ৭০৭টি। এভাবে পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ৮ আগস্ট ৪২ হাজার ৩টি, ৭ আগস্ট ৩১ হাজার ৭১৪টি, ৫ আগস্ট ৪৬ হাজার ৯৯৫টি, ৪ আগস্ট ৩ আগস্ট ৫৫ হাজার ২৮৪টি, ৪৯ হাজার ৫১৪টি, ২ আগস্ট ৫৩ হাজার ৪৬২টি এবং পহেলা আগস্ট ৪৯ হাজার ৫২৯টি।
আর গত ৩১ জুলাই দৈনিক পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ৯৮০টি ও ল্যাবরেটরীর সংখ্যা ৬৪৯টি। এভাবে পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ছিল ৩০ জুলাই ৪৫ হাজার ৪৪টি, ২৫ জুলাই ৩৭ হাজার ৫৮৭টি, ২৪ জুলাই ২০ হাজার ৮২৭টি, ২৩ জুলাই ২০ হাজার ৪৯৩টি, ২২ জুলাই ১১ হাজার ৪৮৪টি, ২১ জুলাই ২৪ হাজার ৯৭৯টি, ২০ জুলাই ২৯ হাজার ৫১০টি। এভাবে ৩০ জুন পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ১০৫টি এবং ল্যাবরেটরীর সংখ্যা ৫৬৫টি।
করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য নমুনা সংখ্যা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর ধূমকেতু ডটকমকে জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তের নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নমুনা পরীক্ষার পরিবিধি বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে সরকার। তারা নমুনা সংগ্রহের সংকট কাটিয়ে উঠেছে। কিন্তু ইচ্ছে মতো নমুনা পরীক্ষা করোনা সম্ভব হচ্ছে না। প্রবল উপসর্গের সন্দেহজনক রোগীকেই পরীক্ষা করানো উচিত। মৃদু উপসর্গের রোগীকে পরীক্ষা না করিয়ে বাসায় আইসোলেশনে থাকলেই চলে। এই পরীক্ষা খুবই ব্যয়বহুল। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে হাতে রিপোর্ট পাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিটি নমুনা পরীক্ষার পেছনে সরকারিভাবে ব্যয় বহন করতে হয় বেশ কয়েক হাজার টাকা।
বিশ্বের অন্য সব করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে অধিকাংশ মানুষ নিজেদের খরচে পরীক্ষা করিয়ে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব না। সন্দেহজনক রোগীদের অধিকাংশই দরিদ্র। এসব কিছু বিবেচনা করেই সরকারি ল্যাবগুলোতে পরীক্ষার শতভাগ ব্যয় বহন করছে সরকার। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে পরীক্ষার কীট সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কৃপণতা নেই বলে জানান ডা. এএসএম আলমগীর।
পর্যায়ক্রমে নমুনার সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ ধূমকেতু ডটকমকে জানান, কয়েকদিন পর পরই নতুন নতুন জায়গায় ল্যাবরেটরি স্থাপন করছে সরকার। করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য ল্যাবরেটরীর পাশাপাশি দৈনিক পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যাও বেড়েছে। দৈনিক সর্বোচ্চ পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে ল্যাবরেটরীর সংখ্যাও ৫৮টি বেড়ে গত ৯ আগস্ট তা ৭০৭টিতে দাঁড়িয়েছে। নমুনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের করোনা পরিস্থিতির চিত্র পর্যালোচনা করে সরকার সময়োপযোগী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারছে।