বুস্টার ডোজে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে

করোনার সঙ্গে লড়াই করার একমাত্র হাতিয়ার করোনা টিকা তবে আমরা অনেকেই ভয় ভিত্তিতে থাকি বুস্টার ডোজে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে তা নিয়ে। টিকা নেওয়ার পর কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে সেই আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকে।

এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও ভুল ধারণা রয়েছে অনেকের। তাই সবার আগে জানা দরকার টিকা নেওয়ার পর কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

করোনার টিকা গ্রহণের পর একেকজন মানুষের শরীরে একেক রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ব্যক্তিভেদে এর তারতম্য অনেক বেশিও হতে পারে। কেউ হয়ত কোনো কিছুই লক্ষ্য করবেন না, কেউ দুর্বল বোধ করবেন, কেউ হয়ত বিছানায় শুয়ে থাকার মতো অবস্থায় পড়ে যাবেন।

শুরুতে করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট আর সংক্রমণের গতি ভাবিয়ে তুলেছিল আমাদের। দিন দিন তা অনেকাংশে কমে এসেছে। সেই সঙ্গে ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্মা কিংবা স্পুটনিক ভ্যাকসিন প্রয়োগে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে বিশ্ব।

টিকা নেওয়ার পর কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে:

১. জ্বর

২. হালকা গা-হাত ব্যথা

৩. মাথা ব্যথা

৪. বমি-বমি ভাব

৫. ক্লান্তিভাব

৬. টিকা নেওয়া হাত ফুলে ব্যথা হওয়া

সাধারণত এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এতে চিন্তার কিছু নেই।

চিকিৎসকরা বলছেন, এগুলো খুব স্বাভাবিক। বরং এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বুঝতে হবে আপনার শরীরে টিকা কাজ করছে। ৪৮ ঘণ্টা পর উপসর্গগুলো মিলিয়ে যায়। তবে এই ৪৮ ঘণ্টা কখনো কখনো খুবই অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়।

কোভিড টিকা শরীরের সঙ্গে একটি কৌশলের আশ্রয় নেয়। টিকা নেওয়ার পর শরীর মনে করে যে সে করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। এই টিকা তখন সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জাগিয়ে তোলে।

প্রথম প্রতিক্রিয়া হয় বাহুতে যেখানে টিকাটি দেওয়া হয়। ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। কারণ তখন রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এবং শুধু বাহুতেই না দেহের বাকি অংশে এর প্রভাব পড়তে পারে এবং দেখা দিতে পারে ফ্লুর মতো উপসর্গ যেমন জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা, দুর্বল লাগা, ঠাণ্ডা লাগা এবং বমি বমি ভাব।

টিকা কাজ করে রাসায়নিক ফায়ার এলার্মের মতো। যা দেওয়ার পর শরীরের ভেতরে কিছু রাসায়নিক পদার্থ প্রবাহিত হতে শুরু করে যা দেহকে সতর্ক করে সংকেত দেয় যে কোথাও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এবং সাথে সাথে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জাগিয়ে তোলে এবং বাহুর চারপাশে যেসব টিস্যু আছে সেগুলোতে রোগ প্রতিরোধী কিছু সেল প্রেরণ করে। সেখানে আসলে কী হচ্ছে সেটা খুঁজে বের করতেই এসব সেল পাঠানো হয়। এসব রাসায়নিকের কারণে আমরা অল্প কিছু সময়ের জন্য অসুস্থ বোধ করতে পারি।

আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থায় বিশাল জেনেটিক বৈচিত্র রয়েছে। আর এ কারণেই একেকজনের শরীরে একেক ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। এই বৈচিত্র্যের অর্থ হচ্ছে কোনো কোনো মানুষের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা একটু বেশি সক্রিয় এবং এর ফলে তারা আক্রমণাত্মক উপায়ে সাড়া দেয়।

আরও একটি কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। আপনি যদি আগেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে টিকা নেওয়ার পর আপনার দেহে প্রচণ্ড শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে। তখন এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *