আইন আদালত

বুয়েটের ‘অক্সিজেট’ প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনুন: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: স্বল্পমূল্যে করোনা রোগীদের হাইফ্লো অক্সিজেন নিশ্চিত করতে ‘অক্সিজেট’ নামের একটি ডিভাইস উদ্বোধন করেছেন বুয়েটের একদল গবেষক। অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে বুয়েটের উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ নামক স্বল্পমূল্যের সি-প্যাপ ভেন্টিলেটর ডিভাইসের অনুমোদনের বিষয়ে ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালত আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইনোভেটিভ মাইন্ডের। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য তার মুখ্য সচিবকে লিখিতভাবে জানান। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকেও জানান।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর সংশ্লিষ্ট সংস্থা এটির অনুমোদন দিচ্ছে না-এ বিষয়টি সোমবার আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনিক আর হক। তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক বেঞ্চ এমন পরামর্শ দেন।

অক্সিজেট সি-প্যাপ প্রকল্পটিতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) শীর্ষক প্রকল্প, অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এবং মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছেন বুয়েট বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মীমনুর রশিদ, কাওসার আহমেদ, ফারহান মুহিব, কায়সার আহমেদ, সাঈদুর রহমান এবং সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসান। গত ১১  মে বুয়েটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই যন্ত্র কোনো প্রকার বিদ্যুৎ শক্তি ছাড়াই শুধুমাত্র অক্সিজেন সিলিন্ডার বা  মেডিক্যাল অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করে ব্যবহার করা যাবে।

এতে আরও বলা হয়, করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে প্রথমে স্বল্প মাত্রায় অক্সিজেন  দেওয়া হয়। কিন্তু এই স্বল্প মাত্রায় রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে উচ্চগতির অক্সিজেন প্রবাহ প্রয়োজন পড়ে যা রোগীর অবস্থার অবনতি রোধ করতে পারে। করোনা প্রকোপ শীর্ষে থাকা অবস্থায় আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা যন্ত্র পাওয়া যায় না। এছাড়াও এ যন্ত্রগুলো ব্যয় বহুল ও ব্যবহার  কেৌশল জটিল হওয়ায় অনেক  ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হয়। সহজে ব্যবহারযোগ্য অক্সিজেট সি-প্যাপ এই ঘাটতি পূরণে সাহায্য করবে।

আইনজীবী অনীক আর হক বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে অক্সিজেটের। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের কয়েকজন করোনা রোগীকে এ যন্ত্র দিয়ে হাই ফ্লো অক্সিজেন  দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডিজিডিএ এটা ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে না। তারা বলেছে, কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য না হলে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।  তখন আদালত বলেন, সরকারের ক্রয়নীতি আছে। বিভিন্ন পদ্ধতি আছে।

এ সময় আইনজীবী অনীক আর হক বলেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার সংকটে প্রাণহানি বাড়ছে।  সেক্ষেত্রে অক্সিজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, এই ধরনের ডিভাইস নিয়ে পাবলিক ক্যাম্পেইন দরকার। আপনি (আইনজীবী) এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইনোভেটিভ মাইন্ডের। তার নজরে আনার জন্য মুখ্য সচিবকে চিঠি দেন।

পরে আইনজীবী অনিক আর হক জানান, অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানিয়েছি। মুখ্য সচিবকেও জানাবো। আশা করছি ভালো কিছু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *