স্বাস্থ্য

বিশ্বে করোনার প্রথম টিকা ব্যবহার শুরু করলো চীন

ধূমকেতু ডেস্ক: কোভিড-১৯ এর জন্য অ্যাড৫-এনকোভ নামের একটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমতি দিলো চীন। চীনের সেনাবাহিনীর গবেষণা ইউনিট ও ক্যানসিনো বায়োলজিকসের তৈরি করা এ পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণ হওয়ায় এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ক্যানসিনো বায়োলজিকস আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে নতুন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের জন্য মোট আটটি ভ্যাকসিন মানব পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। চীন ও চীনের বাইরে ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে পরীক্ষা চালানোর পর অ্যাড৫-এনকোভ নামের এ ভ্যাকসিন নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। এই একই ভ্যাকসিন এরই মধ্যে কানাডাতেও মানব পরীক্ষার জন্য অনুমতি পেয়েছে। এখন অ্যাড৫-এনকোভ নামের এই পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমতি পেল চীনের সেনাবাহিনী।

এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে ক্যানসিনো বায়োলজিকস জানায়, গত ২৫ জুন চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটি এক বছরের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় সেনাবাহিনীকে। ভ্যাকসিনটি চীনের অ্যাকাডেমি অব মিলিটারি সায়েন্স (এএমএস) ও ক্যানসিনো যৌথভাবে তৈরি করেছে। আপাতত এর ব্যবহার চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

বিস্তৃত পরিসরে ভ্যাকসিনটির ব্যবহারের আগে আরও কিছু অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে ক্যানসিনো। সেনাবাহিনীর মধ্যে এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক, নাকি ঐচ্ছিক রাখা হচ্ছে, সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানানো হয়নি। এর ধরন সম্পর্কেও সুস্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনে আরও দুটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনকে রাষ্ট্রায়ত্ত দুটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

ক্যানসিনোর তৈরি করা এ পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটি প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় বেশ সফল হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধে এটি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো ক্যানসিনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে।

এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে নিজেদের তৈরি আরেকটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষার জন্য অনুমতি পেয়েছে চীনা সেনাবাহিনীর গবেষণা ইউনিট এএমএস।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের অনেকগুলো পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষা চলছে। কিন্তু কোনোটিই এখনো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অনুমতি পায়নি।

সিনোফার্মের বিজ্ঞানীদের দাবি, তাদের তৈরি প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্রায়ালে অভূতপূর্ব ফল মিলেছে। তাদের দাবি, এই প্রতিষেধক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ১০০ ভাগ সক্রিয় অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম। এ পর্যন্ত ১,২২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর দু’দফায় পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করে দেখার পর এমনই দাবি করেছেন এই চীনা ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার বিজ্ঞানীরা।

সংস্থা জানিয়েছে, ১২ এপ্রিল থেকে ১,২২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর তাদের তৈরি করোনা প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। ২৩ জুন থেকে এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করার কথা জানিয়েছিল বেজিংয়ের এই সংস্থা।

সোমবার সিনোফার্মের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই চীনা সেনার উপর এই টিকার প্রয়োগের অনুমতি মিলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *