শেষ হয়েছে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের রাউন্ড রবিন লিগ পর্ব। এবার অপেক্ষা শিরোপা উল্লাসের। দুই সেমিফাইনাল জয়ী দল আগামী ১৯ নভেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
এদিকে গ্রুপপর্বে যেসব ক্রিকেটার ভালো করেছেন, তাদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে সেরা একাদশ গড়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ভারতীয় টপ-অর্ডার ব্যাটার বিরাট কোহলিকে অধিনায়ক করা হয়েছে। এসব ক্রিকেটারকে একাদশে রাখার ব্যাখ্যাও দিয়েছে তারা।
কুইন্টন ডি কক (উইকেটকিপার, দক্ষিণ আফ্রিকা)
চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারটি সেঞ্চুরি করেছেন এই ওপেনার। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছেন ১৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন বাকি তিনটি শতক। ৫৯১ রান নিয়ে আসরের এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিনি। এটি এক বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ রান।
ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)
পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এ ছাড়া বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে বেশি রানও তুলেছে অজিরা। মূলত ওয়ার্নারের ধারাবাহিকতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই অঙ্কের নিচে আউট হননি তিনি। চলতি বিশ্বকাপে করেছেন ৪৯৯ রান।
রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড)
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই শতক পেয়েছেন ২৩ বছর বয়সী রাচিন রবীন্দ্র। এরপর অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এ ছাড়া স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন ৭৫ রানের চমৎকার এক ইনিংস। সব মিলিয়ে তার রান সংখ্যা ৫৬৫। এ ছাড়া বিশ্বমঞ্চে তার শিকার ৫ উইকেট।
বিরাট কোহলি (ভারত), অধিনায়ক
চলতি বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি পাঁচটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন ভারতীয় এই ব্যাটার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে ভাগ বসিয়েছেন ওয়ানডেতে শচীন টেন্ডুলকারের সর্বোচ্চ শতকের রেকর্ডে (৪৯)। ৯৯ গড়ে ৫৯৪ রান করে এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহকের তালিকায় রাজত্ব করছেন তিনি। বিশ্বমঞ্চে অধিনায়কের গুরুদায়িত্ব না সামলালেও সেরা পারফরমারদের দলের দলপতি তিনিই।
এইডেন মার্করাম (দক্ষিণ আফ্রিকা)
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মারকুটে এক শতকে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেন তিনি। ৪৯ বলে ভেঙেছিলেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। পরে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সেটা ভেঙে দিয়েছেন। শেষ ১০ ওভারে ১০০ বলে তুলেছেন ২৪৪ দশমিক ৪৪ রান। এ ছাড়া ২ দশমিক ৪ বলে একটি করে বাউন্ডারি রয়েছে তার।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)
ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে খেলা হয়নি তার। তারপরও ৭ ম্যাচে করেছেন ৩৯৭ রান। এর মধ্যে দুই শতকের একটি গড়েছেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এ ছাড়া এই শতকের দিনে ভেঙেছেন ইডেন মার্করামের দ্রুততম শতকের রেকর্ড। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে পায়ে ক্র্যাম্প সত্ত্বেও খেলেন অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস। যা কিনা বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস। অফ-স্পিন বোলিংয়ে এখন পর্যন্ত তার শিকার ৫ উইকেট।
মার্কো ইয়ানসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
চলতি বিশ্বকাপে অনেক দলই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব বোধ করেছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেই অভাবটা টের পেতে দেননি মার্কো ইয়ানসেন। ৭ ইনিংসে ব্যাট হাতে ১৫৭ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৮ ইনিংসে তার শিকার ১৭ উইকেট।
রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)
বাঁহাতি স্পিনে নাস্তানাবুদ করেছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। ১৮ দশমিক ২৫ গড়ে তার শিকার ১৬ উইকেট। তবে ব্যাট হাতেও দলের প্রয়োজনে ছড়িয়েছেন আলোর দ্যুতি। ৪ ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে ৫৫ দশমিক ৫০ গড়ে করেছেন ১১১ রান।
মোহাম্মদ শামি (ভারত)
বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে একাদশেই তার জায়গা হয়নি। তবে সুযোগ পেয়েই রঙ ছড়িয়েছেন শামি। ৫ ম্যাচে ৯ দশমিক ৫৬ গড়ে এখন পর্যন্ত ১৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। রান দেওয়াতেও বেশ কৃপণ ভারতীয় এই পেসার।
অ্যাডাম জাম্পা (অস্ট্রেলিয়া)
শারীরিক সমস্যার সঙ্গে বেশ লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। তবে পিঠের সমস্যা নিয়েও একাই অজিদের টানছেন এই লেগ স্পিনার। এখন পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৯১ গড়ে ২২ উইকেট নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি।
জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
৯ ম্যাচে তার শিকার ১৭ উইকেট। নতুন বলে ব্রেকথ্রু’র পাশাপাশি ডেথ ওভারেও দুর্দান্ত বোলিং করছেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে তার ইকোনমি মাত্র ৩ দশমিক ৬৫। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২ দশমিক ৯৫।
দিলশান মাদুশঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)
দল শেষ চারে জায়গা করতে না পারলেও বল হাতে বেশ আলো ছড়িয়েছেন মাদুশঙ্কা। ২৫ গড়ে ৯ ম্যাচে তার শিকার ২১ উইকেট। এই তালিকায় ১২তম খেলোয়াড় হিসেবে তাকে রাখা হয়েছে।