নিজস্ব প্রতিবেদন, ধূমকেতু বাংলা: মানবদেহে থাকা বিভিন্ন ধরনের অনুজীব বা মাইক্রোবায়োম নিয়ে দেশে গবেষণার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মানবদেহজুড়ে বসবাস করা বিভিন্ন ধরনের অণুজীবকে বলা হয়ে থাকে মাইক্রোবায়োম। আর প্রায় ৯৫ শতাংশ মাইক্রোবায়োমের বাসই অন্ত্রে।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে মাইক্রোবায়োমের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্য ও সংক্রামক ব্যাধির সম্পর্ক নিয়ে রাজধানীতে এক সেমিনারের আয়োজন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআরআইসিএম।
সেমিনারে বলা হয়, মানুষের জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন মাইক্রোবায়োমের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যার কারণে বাড়ছে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। অবশ্য গবেষণায় সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীরে থাকা সিংহভাগ মাইক্রোবায়োম-ই উপকারী, যা মানুষের সুস্থ থাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে জীবনযাপন-খাদ্যাভ্যাসে নেতিবাচক পরিবর্তন, ফাস্টফুড-জাংকফুড প্রবণতা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন মাইক্রোবায়োমের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যা নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, যারা শাক-সবজি খেয়ে সাধারণভাবে জীবন যাপন করছেন তাদের মধ্যে কিন্তু মাইক্রোবায়োম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কম। আবার যারা জাঙ্কফুড খাচ্ছেন তাদের মধ্যে আবার ব্যপারটা পরিবর্তন হচ্ছে।
তবে মাইক্রোবায়োম নিয়ে বাংলাদেশে এখনো কোনো জরিপের তথ্য নেই। এমন অবস্থায় গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হয় সেমিনারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইজবায়োমের প্রধান নির্বাহী ড. নূর এ হাসান বলেন, এই গবেষণা করতে পারলে আমরা জানতে পারব যে, কেন আমাদের এত রোগ হচ্ছে। সবারই পেটের রোগ হচ্ছে, শ্বাসজনিত রোগ হচ্ছে ও লিভারের রোগ হচ্ছে।
অবশ্য গবেষণার ব্যাপারে সব ধরনের সহায়তায় আশ্বাস দিচ্ছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, এ গবেষণায় সরকারের যদি কোনো কাজে লাগে তাহলে সরকার অবশ্যই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে।
মানুষের শরীরের উপকারী মাইক্রোবায়োমকে সতেজ রাখতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অধিক হারে শাকসবজি গ্রহণ, খেলাধুলা, প্রকৃতি ও মাটির সংস্পর্শে থাকার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরো পড়ুন: