উৎসব-পার্বণ

বিদ্যানন্দের ‘এক টাকায় ঈদ আনন্দ’

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: এক টাকায় যখন চকলেটও পাওয়া যায় না, সেই সময়ে এক টাকা দিয়ে শাড়ি, জামা, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি কিংবা চিনি, ছোলা, সেমাই মিলছে- এ যেন রূপকথারই গল্প। সেটাকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে সংগঠনটি চালু করেছে ‘এক টাকায় ঈদ আনন্দ’ কার্যক্রম।

দরিদ্র অসহায় মানুষ নিজের জন্য জামা কাপড়- শাড়ি, লুঙ্গি, প্যান্ট, পাঞ্জাবি কিংবা ছোলা, চিনি, সেমাই, নুডুলস যেটাই কিনতে চাইবেন, দাম দিতে হবে মাত্র এক টাকা! সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকার রাজবাড়ি কনভেনশন সেন্টারে তিনদিনের এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দরিদ্র লোকজন নামমাত্র মূল্যে তাদের পছন্দের পণ্যটি এখান থেকে কিনে মহাখুশী।

আজ মঙ্গলবার থেকে নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরেও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই কার্যক্রম শুরু হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের প্রধান স্বেচ্ছাসেবক কিশোর কুমার দাশ। চট্টগ্রামে সোমবার দুপুরে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর ‘বিক্রেতা’ হিসেবে তিনি শিশু ও বয়স্কদের মাঝে তাদের পছন্দের পণ্যটি তুলে দেন। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের কাজের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা করার কথাও জানান সিএমপি কমিশনার।

এই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে কনভেনশন সেন্টারটি উৎসবের আমেজ পেয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সী লোকজন জড়ো হয়েছেন এক টাকায় তাদের পছন্দসহ পণ্যটি কিনতে। শিশুরা যেমন বেছে নিচ্ছে পছন্দসই কাপড়, তেমনি বয়স্ক নারী, পুরুষও শাড়ি, লুঙ্গির পাশাপাশি সংগ্রহ করছেন মিষ্টান্নের এই ঈদের জন্য সেমাই, চিনি, ছোলাসহ গৃহস্থলী পণ্য। বাজারের হাজার টাকার পণ্য তারা এক টাকায় কিনতে পেরে উচ্ছ্বসিত।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রধান স্বেচ্ছাসেবক কিশোর কুমার দাশ বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মানুষ যখন আয় রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন, সে অবস্থায় আমরা চেয়েছি শিশু এবং অস্বচ্ছল ব্যক্তিরা যেন ঈদে নতুন কাপড় পরতে পারেন।”

করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সহায়তা হিসেবে নয়, বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই মানুষ নিজেরা বাছাই করে তাদের কাপড় কিনুক। এক টাকা পরিশোধ করে তারা মার্কেটের একটা অনুভূতি নিক এখান থেকে।”

নতুন কাপড় নিয়ে নিজের শৈশবের স্মৃতি তুলে ধরে কিশোর বলেন, “আমার কাছে কাপড় আসত দুই/এক বছরে একবার। আমার কাছে কাপড় মানেই ছিল উৎসব।”

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) মো. শামসুল আলম, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীনুর রহমান, উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *