বাপ্পা বললেন, ‘‘ওএসএ-তে মৃত্যু হয়নি বাবার। আমার ধারণা, তাঁর হৃ্দযন্ত্র বিকল হয়ে গিয়েছে আচমকা।’’ ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাপ্পি। ঘোরে চলে যান ধীরে ধীরে। পরিবারের তরফে চিকিৎসককে ফোন করতেই তিনি বলেন, হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পরেও বাঁচানো যায়নি বাপ্পিকে।
এখনও তাঁর গলার আওয়াজ ভেসে আসে কানে। সারা বাড়িতে তাঁর সুরের অনুরণন, জানালেন প্রয়াত সুরকার বাপ্পি লাহিড়ির ছেলে বাপ্পা লাহিড়ি। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বাপ্পার সাক্ষাৎকারে বাবা-ছেলের সম্পর্কের খুঁটিনাটি জানা গেল। বাবার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন বাপ্পা। তাঁর মতো গান গাইতেও চেষ্টা করতেন বাপ্পা, কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। তাঁর মতো গায়কি আর শুনিনি কোথাও। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে, তিনি নেই।’’
বাপ্পি-পুত্র বাপ্পার স্মৃতিচারণ, নিজের সাজগোজ নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে ছিলেন বাপ্পি। বেরোনোর সময়ে চোখে কালো চশমা এবং গয়নাগুলি গুছিয়ে নিতেন শরীরে। দিনের আলো হোক বা রাতের অন্ধকার কালো চশমা কখনও সরাতেন না তিনি। ঠিক যেমন ভাবে শেষ যাত্রাতেও বাপ্পির চোখে চশমা পরিয়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার।
বাপ্পার মনে পড়ে, তাঁর স্কুলের বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে ঠাট্টা করতেন। বাবার জামাকাপড়ের তীব্র রং নিয়ে মস্করা করতেন তাঁর সামনে। বাবাকে তিনি প্রশ্ন করতেন, ‘‘তুমি সকাল ৬টা নাগাদ কেন কালো চশমা পরো বাবা’?’
বাপ্পা জানালেন, এখনই তিনি লস অ্যাঞ্জেলস ফিরবেন না। মায়ের সঙ্গে সময় কাটানো দরকার। বাপ্পি পুত্র বললেন, ‘‘মাকে একা রাখব না বেশ কিছু দিন। মায়ের সারাটা জীবন বাবাকে ঘিরেই কেটেছে। এখন একা। তাই মায়ের সঙ্গে থাকব।’’
বাপ্পার কথায় জানা গেল, গত মাসের অধিকাংশ দিন হাসপাতালেই কেটেছে বাপ্পির। হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে গান শুনতেন বাপ্পি। পাশে রাখা টেবিলে টোকা মেরে তাল দিতেন প্রয়াত সুরকার। এক দিন চিৎকার করে সুরে সুর মিলিয়ে গান গাইতে শুরু করেন তিনি। স্ত্রী চিত্রাণী লাহিড়ি নাকি ধমক দিয়েছিলেন তাঁকে।
১৫ ফেব্রুয়ারি জানা যায়, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় (ওএসএ) মৃত্যু হয়েছে বাপ্পির। ওএসএ হল ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের একটি ব্যাধি। এই রোগে ঘুমনোর সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত হয়ে যায়। কিন্তু বাপ্পা বললেন, ‘‘ওএসএ-তে মৃত্যু হয়নি বাবার। আমার ধারণা, তাঁর হৃ্দযন্ত্র বিকল হয়ে গিয়েছে আচমকা।’’ ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাপ্পি। ঘোরে চলে যান ধীরে ধীরে। পরিবারের তরফে চিকিৎসককে ফোন করতেই তিনি বলেন, হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পরেও বাঁচানো যায়নি বাপ্পিকে।