কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ছেলে আব্দুল জলিলকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রাজারহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনীল কুমার রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রথম দুই স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে গেলে তৃতীয় বিয়ে করেন পয়ার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল। তার নির্যাতন সইতে না পেরে তিন মাস আগে নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দিয়ে তৃতীয় স্ত্রীও চলে যান। জলিলের বাবা পয়ার উদ্দিন ও মা জুলেখা বেগমও মামলার আসামি ছিলেন। তারা জামিন নিলেও ছেলে জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থেকে বাঁচতে তৃতীয় স্ত্রীর করা মামলা মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন জলিল। এজন্য টাকার দরকার হওয়ায় বাবা পয়ার উদ্দিনকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল সে। রোববার (৩ এপ্রিল) ইফতারির পর টাকা চাওয়া নিয়ে বাবা-ছেলের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে বাবা পয়ার উদ্দিনকে উপর্যুপরি আঘাত করলে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন পয়ার উদ্দিন। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের আঘাতে আহত হন স্ত্রী জুলেখা বেগমও। ঘটনার পরই পালিয়ে যান ছেলে জলিল।
এরপর একই দিন রাতে গুরুতর আহত পয়ার উদ্দিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় ও বাম হাতে আঘাতপ্রাপ্ত জুলেখাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই রাতেই রাজারহাট থানায় ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন মা জুলেখা। পরদিন সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পয়ার।
জলিলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, বাড়ির পাশের ধানক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে ঢাকা থেকে সে ছুরিটি এনেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এ তথ্য দিয়েছে পিতার হত্যাকারী জলিল।
রাজারহাট থানার ওসি (তদন্ত) পবিত্র কুমার জানান, জলিলের মা জুলেখা বেগম মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি ঘাতক ছেলেকে সোমবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে এলাকার একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল।