স্বাস্থ্য

বাংলাদেশে করোনার ‘পিক টাইম’ চলে গেছে | জানুয়ারির মধ্যে ৮০ ভাগ মুক্তি: ড. বিজন কুমার শীল

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: বাংলাদেশের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেছেন, আগামী শীত মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ৮০ ভাগ কমে আসবে। এরই মধ্যে এই সংক্রমণ অনেকটাই দুর্বল হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে করোনা পরিস্থিতির ‘পিক টাইম’ চলে গেছে। যদিও এটা এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সুনির্দিষ্ট এলাকা ধরে আর লকডাউনের প্রয়োজন নেই। সমস্যা হলো- এটা বাতাস ও পানিতেও ছড়ায়। তাই এখন ভ্যাকসিন খুব একটা কার্যকর হবে বলে মনে হয় না।

জাতীয় একটি দৈনিক পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. বিজন কুমার শীল বর্তমানে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী।

করোনার ‘পিক টাইম’ চলে গেছে

দেশবাসীর উদ্দেশে ড. বিজন বলেন, নিজের স্বাস্থ্য নিজেকেই রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। বিজন কুমার শীল বলেন, কোনো সন্দেহ নেই, করোনা এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। ‘হার্ড ইমিউনিটি’ থাকায় এর ভয়াবহতা কমে আসছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানের ফলে সংক্রমণের তীব্রতাও কমছে। তবে করোনা সংক্রমণের ধরনও বদলাচ্ছে। এখন কিছু মানুষের ডায়রিয়া হচ্ছে। রক্তচাপ উঠানামা করছে। এর সঙ্গেও করোনার সংক্রমণের সম্পর্ক রয়েছে। করোনা দীর্ঘযাত্রায় এখন অনেকাংশে দুর্বল। তবে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। করোনার ‘পিক টাইম’ চলে গেছে। ধরা যাক, করোনা পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছে। এখন তা নিচের দিকে ধীরে ধীরে নামছে। এ ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে সেরে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। ১৫-২০ দিন বা কারও মাস লাগে। মাঝখানে এত গরম আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। এ সময় সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। সেখানে অসুস্থ মানুষের ইমিউনিটি আরও নিম্নমুখী হয়।

গত ১২ দিন একদিকে গরম আরেক দিকে বন্যার পানি-দুটোই করোনা আক্রান্ত মানুষকে আরও ‘অসুস্থ’ করেছে। তবে আমাদের দেশে করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর হার অনেক দেশের তুলনায় কম। এটা একটি ভালো দিক। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও কিন্তু মৃত্যু বাড়ছে।

মানুষকে ভয় দেখানো যাবে না

বিজন কুমার শীল বলেন, এ মুহূর্তে আর লকডাউনের প্রয়োজন নেই। সারা দেশেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে গেছে। কোথায় এখন লকডাউন হবে? এখন মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাদের আতঙ্কিত করা যাবে না। করোনায় আক্রান্ত হলে প্রাথমিক চিকিৎসাগুলো কী, তা সবাইকে জানাতে হবে। মানুষকে ভয় দেখানো যাবে না। তবে মার্চ-এপ্রিলে দেশজুড়ে কার্যকর লকডাউন করতে পারলে আজকের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। এখন একমাত্র জনসচেতনতাই জরুরি।

মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারি করা প্রসঙ্গে ড. বিজন কুমার বলেন, এটা ভালো দিক। তবে সবাইকে মানতে হবে। এটাকে আমাদের সবাইকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। আরও আগে থেকেই বাধ্যতামূলক করা উচিত ছিল।

ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে অনেকাংশেই মুক্তি পাব

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে (শীত মৌসুম) ৮০ ভাগ করোনাভাইরাস চলে যাবে। আমরা অনেকাংশেই করোনা থেকে মুক্তি পাব। আগামী শীতের মধ্যেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকাংশে কমে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *