এম খায়রুজ্জামান (বাঁয়ে), ডানে উপরে দেতুক সেরি হামজা জাইনউদ্দিন ও নিচে ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেতুক সেরি হামজা জাইনউদ্দিন এই খবর নিশ্চিত করেছেন। আজই মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম এনিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করলো মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমটি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেতুক সেরি হামজা জাইনউদ্দিন উদ্ধৃত করে বলে, গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, প্রক্রিয়া মেনেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেতুক সেরি হামজা জাইনউদ্দিন
বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেতুক সেরি হামজা জাইনউদ্দিন জানান, বাংলাদেশে করা এম খায়রুজ্জামানের অপরাধ এবং তার দেশের অনুরোধের ভিত্তিতেই মালয়েশিয়ার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে গতকাল বুধবার দেশটির কুয়ালালামপুরের আম্পাং এলাকা থেকে এম খায়রুজ্জামানকে আটক করা হয়। মালয়েশিয়ার একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করে। সূত্র জানায়, তাকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে।
এম খায়রুজ্জামান
এম খায়রুজ্জামান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। তার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। জেল হত্যার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর তিনি মিশর ও ফিলিপাইনের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত ছিলেন।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাকে ওই পদ থেকে বাতিল করে দেশে ফিরতে বলা হয়। তবে তিনি দেশে না ফিরে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে শরণার্থী হিসেবে ছিলেন। তিনি ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড পাওয়ার পর মালয়েশিয়াই বসবাস করছেন।
ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড
এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে অবসরে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২০০৩ সালে তিনি আদালতে জামিনে মুক্তি পান।
খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। বিএনপির জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের প্রধান ছিলেন রিটা রহমান। পরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেন। রিটা রহমানের পিতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী।