নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী তিনটি ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা বন্যহাতি পাহাড়ে ফেরাতে স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে সার্চ লাইট বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। বুধবার (১৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদের হল রুমে এসব লাইট বিতরণ করা হয়।
বন্যপ্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা যায়, বছরের এই সময়টাতে কয়েক মাস কিছু হাতি শেরপুর-জামালপুরের গারো পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় কাটায়। ভারতের মেঘালয়ের বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি এলাকার বনভূমি উজাড় ও মানুষের অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই বনের হাতিগুলো বাংলাদেশে অবশিষ্ট প্রাকৃতিক বনে আসছে। তবে বাংলাদেশের বনও তেমন সমৃদ্ধ নয়, তাই খাবারের খোঁজে হাতিগুলো কখনও কখনও কৃষকের ধান বা সবজি ক্ষেতে হানা দেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের মতে, বন হাতির আবাসস্থল বন দখল করে ফসলি জমি তৈরি ও বসতি নির্মাণের ফলেই হাতির সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শেরপুরে হাতি জনবসতিতে এসে হামলা করছে না বরং হাতিদের তাড়া করা, ঢিল মারার কারণে তারা তেড়ে আসছে।
শেরপুরে হাতি-মানুষ এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে বহু বছর ধরে। এই দ্বন্দ্বের ফলে সেখানে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত বন্যহাতির আক্রমণে মানুষ মারা গেছেন ২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ২৭ জন। এ সময় হাতি মারা গেছে ২৫টি। যার বেশিরভাগই বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে শেরপুরে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বন অধিদপ্তর। এছাড়া হাতি রক্ষায় আইইউসিএনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে বন অধিদপ্তর। যদিও সেসব প্রায় কাজেই আসেনি। এরমধ্যেই গত ৯ নভেম্বর বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে একটি হাতি হত্যা করে স্থানীয়রা।
হাতির সঙ্গে মানুষের এই দ্বন্দ্ব ঠেকিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতি তাড়াতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নয়াবিল ইউনিয়ন, পোড়াগাঁও ইউনিয়ন ও রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবককে একটি করে সার্চ লাইট দেওয়া হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ, পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক জিয়াউল ইসলাম, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ঝুপড়িঘরের রুটি বিক্রেতা থেকে ইউপি মেম্বার রিক্তা