নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ঢাকার পর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বিমানবন্দরটির সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে। ওসমানী বিমানবন্দরে নির্মাণ করা হবে নতুন টার্মিনাল ভবন, যার মাধ্যমে বছরে ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। আধুনিক স্থাপত্য শৈলী, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও দৃষ্টিনন্দন উপকরণ ব্যবহারের ফলে বিমানবন্দরটি নতুন রূপে আবির্ভূত হবে।
বেবিচক জানিয়েছে, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ ছাড়াও সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত কার্গো টার্মিনাল, ফায়ার স্টেশন, কন্ট্রোল টাওয়ার, প্রশাসনিক ভবন, রক্ষণাবেক্ষণ ভবন, ছয়টি উড়োজাহাজ পার্কিং উপযোগী অ্যাপ্রোন, টেক্সিওয়ে, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র, ফুয়েল ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড হাইড্রেন্ট সিস্টেমসহ আরও অনেক সুবিধা সন্নিবেশ করা হবে।
১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে বেবিচক। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডকে টার্মিনাল ভবনের কার্যাদেশ দেয় বেবিচক।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘সরকার দেশের এভিয়েশন খাতকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। দেশের সব বিমানবন্দরকে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। শুধু রাজধানী নয়, দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরকেও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে প্রকল্প চলমান আছে।
সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ শেষ হলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের পরিচিতি বাড়বে। ঢাকার মতো সিলেটেও আরও অনেক বেশি দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এতে দেশের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হবে, পাশাপাশি অর্থনীতিও আর গতিশীল হবে।’
জানা গেছে, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মিত হলে নতুন ওই ভবন দিয়ে বছরে ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। আধুনিক স্থাপত্য শৈলী সম্বলিত কাঠামোগত ডিজাইন, অত্যাধুনিক সুযোগ সবিধা ও স্থাপনাদি এবং দৃষ্টিনন্দন উপকরণাদি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্মিতব্য এ টার্মিনাল দেশি-বিদেশি যাত্রীদের মুগ্ধ করবে।
ওসমানী বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের স্থাপত্য নকশা যৌথভাবে করেছে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান Yooshin ও Heerim। তারা Incheon International Airport এর টার্মিনাল-২ সহ বিশ্বের বেশকিছু বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের স্থাপত্য নকশা করেছে। নতুন টার্মিনাল ভবনে থাকবে ৬টি বোর্ডিং ব্রিজ। এরমধ্যে ডাবল ডকিং ২টি, সিঙ্গেল ডকিং ২টি। কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক-ইন-কাউন্টার, যার মধ্যে ২টি স্বয়ংক্রিয়, বহির্গামী ও আগমনী যাত্রীদের জন্য মোট ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার। ৬টি এসকেলেটর, ৯টি লিফট এবং আগমনী যাত্রীদের জন্য ৩টি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট, ভবনের ফ্লোরে বসবে ইঞ্জিনিয়ারড স্টোন। নতুন টার্মিনালের প্রথম তলা আগমনী যাত্রীদের এবং দ্বিতীয় তলা বহির্গামী যাত্রীদের জন্য ব্যবহার করা হবে। সিলেটের যেকোনও প্রান্ত থেকে যাত্রীরা টার্মিনালের চেক-ইন লেভেলে সরাসরি যেতে পারবেন। আবার বিদেশ হতে আগত যাত্রীরা প্রথম তলা থেকে বিমানবন্দর ত্যাগ করে সারফেস রোড ব্যবহার করে শহরের যেকোনও প্রান্তে যেতে পারবেন। টার্মিনাল অভিমুখী বা বহির্গামী সব যানবাহন চলাচল হবে একমুখী, যা বিমানবন্দর অংশকে সম্পূর্ণ যানজটমুক্ত রাখবে।