তথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান : মোস্তাফা জব্বার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠাই করেননি, তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের ঠিকানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তার দ্বিতীয় বিপ্লব ছিলো অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান। একুশ শতকের শিক্ষা, যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্যহীন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তিনি লক্ষ্য নির্ধারণ করে গেছেন।

মন্ত্রী সোমবার রাতে ঢাকায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) আয়োজিত ‘প্রযুক্তির উত্থান: শেকড়ে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

বিসিএস সভাপতি মো: শাহিদ-উল-মুনীর-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত। অনুষ্ঠানে সাবেক ছাত্র নেতা মাহবুব জামানও বক্তৃতা করেন। বিসিএস নেতা বীরেন্দ্র নাথ অধিকারি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবকে শোষণ-বঞ্চনা, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও শোষকদের বিরুদ্ধে আঘাত করেছিলেন। শোষিত ও বঞ্চিতদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নেবার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেই তাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল উদ্দেশ্যই ছিলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে হত্যা করা। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতে তার নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় যাতে কেউ নেতৃত্ব দিতে না পারে সে জন্য স্ত্রী–সন্তানসহ নিকটাত্মীয় এমনকি জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

একাত্তরের রণাঙ্গণের বীর সেনানী মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও শোষকদের বিরুদ্ধে আঘাত করেছিলেন। এজন্যই তাঁকে হত্যা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিভ্রান্ত তৈরি করা হয়েছে, সমাজতন্ত্র উচ্চারিত হয়নি এবং ধর্মনিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম গণনাটক ‘একনদী রক্তের’ নাট্যকার মোস্তাফা জব্বার বলেন, হাজার বছর ব্যাপী ইরানি-তুরানি, আর্য-অনার্য, বৃটিশ –পাকিস্তনিরা বাঙালির এই উর্বর ভূখণ্ডটি শাসন করেছে, শোষণ করেছে এখানকার মানুষকে। বঙ্গবন্ধুই হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্ত করেছেন, পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাঙালির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তিনি বলেন, বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন, আইওটি, ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন এবং টিএন্ডটি বোর্ড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ডিডিটালাইজেশনের বীজ বপন করে গেছেন। একুশ শতকের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এবং কুদরত-ই খোদা শিক্ষা কমিশন গঠন ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি। একুশ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গত ১২ বছরে অভাবনীয় উচ্চতায় বাংলাদেশকে উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বিশ্বের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু শোষিত, বঞ্চিত, অসহায় দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই বিশ্বে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতো। তারা বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রামে বিসিএস–এর ভূমিকা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *