প্রচ্ছদ

ফ্রান্সের যে স্কুলগুলোতে পড়াশোনা করতে হয় নাক দিয়ে

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: পৃথিবীতে এমন স্কুলও আছে, যেখানে ভর্তি হতে হলে কর্তৃপক্ষ প্রথমেই দেখে হবু শিক্ষার্থীর নাক আছে কি না। শুধু নাক থাকলেই চলবে না, তা ভালো কাজ করে কি না, তা–ও পরখ করে দেখা হয় ভালোভাবে। অর্থাৎ চোখ, কান, হাতের চেয়েও ‘কর্মক্ষম’ কিংবা ‘সচল’ একটি নাকই এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ধরনের স্কুলের ‘ডাকনাম’ হলো ‘নাকের স্কুল’। তো এই নাকের স্কুলে কী হয় আদতে?

শিক্ষার্থীদের নাক নিয়ে এত টানাটানি হয় ফ্রান্সের কিছু পারফিউম বা সুগন্ধিবিষয়ক স্কুলে। ভবিষ্যতে যারা পেশায় ও নেশায় সৌগন্ধিক হবে, যারা পারফিউমের জাদুর জগতে কাজ করবে, এসব স্কুল তাদের জন্য। সেখানে শিক্ষার্থীদের ৩০০ থেকে ৫০০ রকমের ঘ্রাণ মনে রাখতে হয়।

অর্থাৎ চোখ বন্ধ করে শুধু গন্ধ শুঁকেই বলে দিতে হয়, তা কিসের ঘ্রাণ। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ঘ্রাণশক্তি প্রখর না হলেই নয়। আর এই প্রখর ঘ্রাণশক্তিওয়ালা শিক্ষার্থীদের মধ্যেই ভবিষ্যতে কেউ কেউ সৃষ্টি করে নতুন নতুন মন উতলা করা সুগন্ধি।

বিজ্ঞান এবং সৃজনশীলতার এক অপূর্ব সমন্বয়ের নাম পারফিউম। এটিও যে পড়ার বিষয় হতে পারে, তা অনেকেই হয়তো জানেন; কারও কারও কাছে হয়তো অজানা। ফ্রান্সে বিষয়টি পড়ানো হয়, এমন স্কুল আছে হাতে গোনা কয়েকটি।

এর মধ্যে নামকরা স্কুলগুলোর কয়েকটি হলো ইসিপকা (ইন্টারন্যাশনাল হায়ার ইনস্টিটিউট অব পারফিউম, কসমেটিকস অ্যান্ড ফুড অ্যারোমেটিকস), ইএসপি (হায়ার স্কুল অব পারফিউম) ও জিআইপি (গ্রাস ইনস্টিটিউট অব পারফিউমারি)।

উচ্চশিক্ষার জন্য এসব স্কুলে ভর্তি হতে হলে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, বিশেষ করে রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞানে ভালো দখল থাকতে হয়। দর্শন, বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টির ওপর জানাশোনাকেও দেওয়া হয় প্রাধান্য। আর মাতৃভাষার সঙ্গে অন্তত দুটি বাড়তি ভাষা জানা থাকলে নাকের স্কুলে নাক গলানো সহজ।

বিদেশিদের এখানে পড়ার সুযোগ আছে। থাকা, খাওয়া, স্কুলের ফি ইত্যাদিসহ প্রতি মাসের জন্য কম করে সাড়ে তিন হাজার ইউরোর জোগাড় থাকতে হয়। পাঁচ বছর পড়াশোনার পর দিতে হয় ‘সৌগন্ধিক’ বা ‘উন্নত নাসিকা’র স্নাতকোত্তর পরীক্ষা। উত্তীর্ণ হতে পারলে পারফিউমের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানে ভালো বেতনে চাকরি পাওয়া অনেকটাই সহজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *