প্রচ্ছদশিক্ষা ও সাহিত্য

ফের আন্দোলনে উত্তপ্ত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়


সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিক ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে আবারও আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর গতকাল শুক্রবার বিকালে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সিন্ডিকেট সভা বসলেও সেখানে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তারা এমনটা জানার পর থেকে আবারও অনশনের মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া আবু জাফর হোসাইন। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে আমাদেরকে ফোন দিয়ে জানানো হয় কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা মুলতবি করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পরে আমরা ভারপ্রাপ্ত ভিসি স্যারকে ফোন দিই। তখন তিনি বলেন, আজ এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। তোমরা ক্লাস-পরীক্ষাতে ফেরো। আমরা আবার সিন্ডিকেট সভা বসে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তখন আমরা আগামীকালকেই আবার এই সিন্ডিকেট সভা বসবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত এক মাসের মধ্যে এই সভা বসার সম্ভাবনা নেই।
এই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদের সবধরনের আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু যেহেতু আমরা এর সমাধান পাচ্ছি না তাই গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা থেকে আবারও আমরণ অনশন শুরু করেছি।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফকে একাধিকবার তার মুঠোফোনে চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় এঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকার ধানমন্ডির আবাসন ভবন অফিসে সিন্ডিকেট বৈঠক শুরু হয়। টানা তিন ঘণ্টা বৈঠক চলার পর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাত সাড়ে ৭টার দিকে বৈঠক শেষ হয় বলে জানা গেছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন নিজেই কাঁচি হাতে ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তাকে বকাঝকা করেন বলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরপর ওই ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
ওই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন। এই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *