কৃষি-মৎস্য

ফুলের মাস ফেব্রুয়ারি: ২৫ কোটি টাকা বিক্রির আশা যশোরের ফুলচাষিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারিকে টার্গেট করে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফুলের ফলন ভালো হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।

রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরাসহ প্রায় ১১ প্রজাতির ফুল চাষ হয় ফুলের রাজ্য গদখালীতে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। সারাবছর বাজারে ফুলের সরবরাহ থাকলেও পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিগুণ।

যশোর জেলায় প্রতিবছর প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়। ফুলের বাজার ধরতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন এখানকার ফুলচাষিরা।

১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার আটটি উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়ে থাকে। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ও পানিসারা গ্রামেই প্রায় ৫ হাজার কৃষক ফুল চাষ করছেন ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত ফুল দিয়ে দেশের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ যোগান দেন এখানকার চাষিরা। যদিও ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও করোনা মহামারির কারণে ফুলের উৎপাদন কমে গেছে। করোনার মধ্যেই চলতি বছরের বিভিন্ন দিবসকে টার্গেট করে গত বছরের আগস্ট মাস থেকে নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন এই অঞ্চলের ফুলচাষিরা। ফুল খেতের পরিচর্যায় দিনরাত ঘাম ঝরাচ্ছেন তারা।

গত কয়েক মাস হাড়ভাঙা খাটুনির পর তাদের ক্ষেতে নানা রঙের ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এ বছর ২৭২ হেক্টর জমিতে গ্লাডিওলাস, ১০৫ হেক্টর জমিতে গোলাপ, ১৬৫ হেক্টর জমিতে রজনীগন্ধা, ২২ হেক্টর জমিতে জারবেরা, ৫৫ হেক্টর জমিতে গাঁদা এবং ছয় হেক্টর জমিতে অন্যান্য ফুলের চাষ হয়েছে।

গদখালী গ্রামের রুবেল হোসেন জানান, বর্তমানে গদখালী বাজারে পাইকারি ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস গোলাপ তিন টাকা, গ্লাডিওলাস রং ভেদে প্রতি পিস ১৩ টাকা, জিপসি ফুলের বান্ডেল ৪০০ টাকা, ক্যালেন্ডার প্রতি বান্ডেল ৫০০ টাকা, গাঁদা ১০০ পিস ১৫০ টাকা ও জারবেরা ফুল প্রতি পিস আট টাকা।

ফেব্রুয়ারিতে ফুল বিক্রি বেশি

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট করেছেন গদখালীর ফুলচাষিরা। শুধু ঝিকরগাছা ও গদখালীতে ফুলের চাষ হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে।

তিনি আরও জানান, গত বছর করোনার কারণে ব্যবসা হয়নি। গদখালী অঞ্চলে পাঁচ হাজার চাষির মধ্যে সরকারের প্রণোদনা ঋণ পেয়েছেন ৫৫ জন। বাকিরা বিভিন্ন এনজিও ঋণ ও জমি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *