নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: সৌদি আরব ও কুয়েতগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফাইজারের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীরা তাদের ভ্যাকসিনেশনের জন্য অনেক দিন থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দাবি করে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত সরকার তাদের প্রাথমিকভাবে ফাইজার ও পরবর্তীতে মডার্নার টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা প্রবাসী কর্মীদের (সৌদি আরব ও কুয়েতগামী কর্মী) ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিন্তু, দেশে যখন মডার্নার ভ্যাকসিন আসবে, তখন সেটাও তাদের দেওয়া হবে।’
প্রথম দিকে সরকার অভিবাসী কর্মীদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু, ভ্যাকসিনের স্বল্পতার কারণে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যা তৈরি হয়।
পরবর্তীতে চীন সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া সিনোফার্মার টিকা হাতে আসলে তা দিয়েই সরকার প্রবাসী কর্মীদের টিকাদান প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু, কর্মীরা জানান, সৌদি সরকার সিনোফার্মার টিকার অনুমোদন দেয়নি। তাই তাদের সেখানে পৌঁছেই হোটেলে নিজ খরচে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
উপসাগরীয় অঞ্চলের আরেকটি দেশ কুয়েতও জানায়, ফাইজার বা বায়োটেক, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না অথবা জনজন অ্যান্ড জনসনের টিকা না নেওয়া কোনো অভিবাসী কর্মীকে তারা দেশে ঢুকতে দেবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভিবাসী কর্মীদের একটা তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, তখন আমরা সবার টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করব।
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার চৌধুরী। তিনি জানান, তারা প্রবাসী কর্মীদের জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দাবি করেছিলেন। কিন্তু, ফাইজারের টিকাও তাদের জন্য ভালো।
আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। টিকা নিলে যেহেতু কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না, সেহেতু প্রবাসী কর্মীরা এখন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ফাইজারের টিকা আসার পর থেকে অনেকে এই টিকা পেতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন।
গত ৩১ মে কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকার প্রথম চালানটি দেশে আসে। পরে সরকার ঢাকার তিনটি কেন্দ্রে ফাইজারের এই টিকা দিতে শুরু করে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে— শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।