খেলাধুলা

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জিতেও ‘আইসিইউ’তে পাকিস্তান

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নাটক যেন চলছেই। গতকাল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৫ রানের পরাজয়ের পর ‘গ্রুপ ২’র হিসাব নিকাশই এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে আবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে বৃষ্টি আইনে ৩৩ রানে হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। ফলে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাবর আজমের দল। আগামী রোববার (৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। এই ম্যাচে যদি জয়ও পায় পাকিস্তান, তবুও ভারত-জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের দিকের চেয়ে থাকতে হবে তাদের। ফলে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জিতেও ‘আইসিইউ’-তে রয়েছে পাকিস্তান দল।

এসসিজিতে বড় রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরই হানা দেয় বৃষ্টি। ৪০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয় ম্যাচ। তবে বৃষ্টি আইনে আফ্রিকার নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩০ বলে ৭৩ রান; যা এক প্রকার অসম্ভবই। তবে গোল বলের ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছু নেই। বৃষ্টির পর মাঠে নেমেই পাক বোলারদের শাসন করতে থাকে হেনরিখ ক্লাসেন এবং ত্রিসান স্টাবস।

তবে ব্যক্তিগত ১৫ রান করে ফিরে যান ক্লাসেন। এরপর আর ম্যাচের গুরুত্ব তৈরি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ধারাবাহিকভাবেই হারিয়েছে উইকেট। ক্রিজে থাকা ব্যাটার স্টাবস অবশ্য ফিরেছেন ১৮ রান করে। শেষ ওভারে ৪১ রানের প্রয়োজন হলে সেটা সংগ্রহ করা অসম্ভব ছিল। তবে নির্ধারিত ওভার শেষে আফ্রিকা সংগ্রহ করে ১০৮ রান। দিন শেষে ৩৩ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাভুমার দল। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন শাহীন আফ্রিদি। এছাড়া, দুই উইকেট নিয়েছেন শাদাব খান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে দলটি।

এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ইনফর্ম মোহাম্মদ রিজওয়ানকে হারায় পাকিস্তান। ওয়েইন পারনেলকে ৪ হাঁকানোর পরই বোল্ড হয়ে ফেরেন রিজওয়ান। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক বাবরের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ হারিস।

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে সুযোগ পেয়ে ঝোড়ো সূচনা এনে দেন হারিস। ১১ বলে ২টি চার ও ৩টি ছয়ে ২৮ রান করেন হারিস। এরপর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে দলটি। এক পর্যায়ে ৪৩ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর ১৫ বলে করেন ৬ রান।

দলের এমন বিপর্যয়ে হাল ধরেন মোহাম্মদ নওয়াজ ও ইফতিখার। দুইজনে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ২৮ রান করে নওয়াজ রান আউটের শিকার হলে ভাঙে জুটিটি।

১৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান করা পাকিস্তান সর্বসাকুল্যে দেড় শ’র কোটা ছুঁতে পারবে বলেই মনে হচ্ছিল। তবে শাদাব খান দৃশ্যপটে আসতেই সব বদলে যায়। ইফতিখারের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রোটিয়া বোলারদের ওপর রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান।

দুইজনে ৫ ওভার ৫ বলের মধ্যে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তোলেন ৮২ রান। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী ছিলেন শাদাব। মাত্র ২২ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছয়ে ফিফটি হাঁকিয়ে ৫২ রান করে শাদাব ফিরলে ভাঙে জুটিটি। অপরপ্রান্তে ফিফটি হাঁকান ইফতিখারও। ৩৫ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ৫১ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

প্রোটিয়া বোলারদের মধ্যে আনরিখ নরকিয়ে ৪১ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও অন্য চার বোলার নেন ১টি করে উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *