অভিমত

প্রীতি ও প্রেমে সম্প্রীতির বন্ধনে যখন মিলি পরস্পরে, করোনা কাঁদিয়া কয় পালিয়ে বাঁচি, ছাড় আমারে

খোকন কুমার রায়:

প্রজাতিয় আত্মীয় হিসেবে প্রাণীকূলের মধ্যে মানুষই মনে হয় পারস্পরিক সহযোগিতার শীর্ষ স্থান দখল করে রেখেছে। যুগে যুগে এমনটাই দেখছি আমরা। দুর্যোগে, সংকটে ও বিপদে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, মত নির্বিশেষে সকলেই পারস্পরিক সহযোগিতার হাত সম্প্রসারণ করে।

বর্তমান করোনা সংকটে এমনটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি। সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দুর্যোগ মোকাবেলায়। এরকম দুর্যোগে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয় অধিক হারে এবং প্রাচীন কাল হতেই আমরা এ রকমটা দেখে আসছি।

আরও পড়ুন: করোনার কাজ করোনা করছে ঘুরে বেড়াচ্ছে হায়, তাই বলে কি ঘরে বসে থাকা আমাদের শোভা পায় ?

বৈশ্বিক সংকটকালে পুরো বিশ্ব সম্প্রদায় আজ একাট্টা- এই জীবাণু বিরোধী যুদ্ধে। ওষুধপত্র, ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা প্রভৃতি কর্মকান্ডে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের প্রমাণ পাচ্ছি। করোনার ওষুধ প্রস্তুতকারী উন্নত দেশগুলো অন্যান্য দেশকে সহায়তা করছে প্রযুক্তি ও তথ্য দিয়ে। এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মভিত্তিক বিবেচনা কখনোই নজরে আসেনি। মোট কথা মানুষকে বাঁচাতে হবে, এই মহামারী হতে।

অতীতে মানুষে-মানুষে যেমন যুদ্ধ হয়েছে পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে, বর্তমানে পৃথিবীর সকল মানুষ যুদ্ধ করছে অদৃশ্য জীবাণুর বিরুদ্ধে, মানুষকে বাঁচাতে। সৃষ্টির আদি আপনজন মানুষ যদি জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও স্বার্থকে বিবেচনায় না রেখে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক হিসেবে বর্তমান সংকটকালের মতো ভবিষ্যতেও পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখে তবেই হবে মানবতার বিজয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের দুটি লাইন সবার মনে গেঁথে থাক সর্বদা-

“হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?

কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।”

কাজেই বিভেদ নয়, চাই সম্প্রীতি ও শান্তি।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *