স্বাস্থ্য প্রতিবেদক: প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় সচেতনতা ও প্রাথমিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা ভাইরাসের ওষুধ, ভ্যাকসিন, ডায়াগনোসিস ও গবেষণার জন্য আগামী সপ্তাহে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে বিশ্বের কয়েকশ’ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ যোগ দেবেন।
এদিকে, নভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই আশার বাণী শুনিয়েছেন চীনের গবেষকরা। তারা বলছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়া থেকে একবার সুস্থ হওয়া ব্যক্তির দেহে দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তবে এটি আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে বলে জানান সাংহাইয়ের গবেষক চেন দিচাং।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে চীনের উহানে সৃষ্ট নভেল করোনা ভাইরাস। চীন তো বটেই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। এ কারণে দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দেশগুলোকে সহায়তা করার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চীনে নিযুক্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি গাউডেন গালিয়া বলেন, এ লক্ষে তিন ধাপের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা দল প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে মার্স ও সার্সের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস নিয়ে সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিনিয়ত আমরা নতুন নতুন সব তথ্য যোগ করছি।
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারেও দিনরাত কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় প্রতিরোধই একমাত্র ভরসা। প্রতিরোধের পাশাপাশি তাই সচেতনতা বাড়ানোর দিকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে করোনা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের গবেষণা, ওষুধপত্র ও ডায়াগনোসিস নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গল ও বুধবার জেনেভায় বিশ্বের কয়েকশ’ বিশেষজ্ঞ একত্রিত হবেন।
চীনের উহান প্রদেশে ভাইরাসের উৎপত্তি, ভাইরাস পরবর্তী করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা ড. মারিয়া ভ্যান কারখোভে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিশেষজ্ঞ মানুষগুলোকে আমরা এক করতে চাই। তাদের অভিজ্ঞতার বিনিময়ের মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণা করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত: এখনই প্রতিরোধ করা না গেলে বিশ্বের ৫০টি দেশে করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। আক্রান্ত হয়ে চীনে একদিনে ৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৬৩ জনে। চিকিৎসাধীন ২৮ হাজারের বেশি মানুষ। ইতোমধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে চীনসহ অন্তত ২৮টি দেশে। ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৩টি দেশে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এ অঞ্চলের বাকি দেশগুলোও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। সংকট কাটিয়ে উঠতে আপাতত ৬শ’ ৭৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে সংস্থাটি।