অর্থনীতি

প্রবাসীদের বন্ড কিনতে লাগবে এনআইডি

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাজারে চালু থাকা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় থাকা তিনটি বন্ডের লেনদেন অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে। এর ফলে এখন থেকে সেখানে বিনিয়োগ করতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক হচ্ছে। পাশাপাশি সব ধরনের সঞ্চয় স্কিম অনলাইনের আওতায় চলে আসবে। এতে কার কোন স্কিমে কত বিনিয়োগ রয়েছে, তা এক জায়গা থেকেই জানার সুযোগ হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার নতুন এ ব্যবস্থার উদ্বোধন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রবাসীদের জন্য তিন ধরনের সঞ্চয় বন্ড রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার বন্ড। এর মধ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে প্রবাসীরা নিজ নামের পাশাপাশি দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের নামেও বিনিয়োগ করতে পারেন। আর বাকি দুটোতে প্রবাসীরা শুধু নিজ নামে বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিয়োগ করতে পারেন। এসব বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিস এবং বিদেশে বাংলাদেশি ব্যাংকের শাখা, এক্সচেঞ্জ হাউস, এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংক শাখা থেকে বেচাকেনা হয়ে আসছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক (নীতি, অডিট ও আইন) মো. শাহ আলম বলেন, প্রবাসী বন্ড জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের অংশ। এরই মধ্যে সঞ্চয়পত্রের লেনদেন অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এখন প্রবাসীদের জন্য থাকা বন্ডগুলোকে একই সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে। কেউ সমন্বিত বিনিয়োগ সীমার বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ করছে কিনা তা যাচাই এখন থেকে সহজ হবে। তিনি বলেন, এখন থেকে বন্ড কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। যেসব প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস থেকে যাতে পরিচয়পত্র নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড সর্বোচ্চ সুদবাহী বন্ড। এতে মেয়াদ শেষে বিনিয়োগের পরিমাণ বিবেচনায় ৯ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যায়। প্রবাসীরা নিজে বা তার মনোনীত ব্যক্তি অথবা বাংলাদেশে তার সুবিধাভোগীর নামে বাংলাদেশি টাকা বা বৈদেশিক মুদ্রায় এই বন্ড কিনতে পারেন। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এই বন্ড কিনতে পারেন। আর ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড শুধু অনিবাসী বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিক নিজ নামে কিনতে পারেন। তিন বছর মেয়াদি এ বন্ডে মেয়াদ শেষে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। প্রথম বছর শেষে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ আর দ্বিতীয় বছর শেষে ৭ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। একই নিয়ম ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডেও। তবে সুদহার তুলনামূলক কম। মেয়াদ শেষে এর সুদহার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। উভয় বন্ডেই মূল বিনিয়োগ ও মুনাফা ইউএস ডলারে দেওয়া হয়।

এসব বন্ডে বিনিয়োগ করা অর্থ এবং অর্জিত মুনাফা আয়করমুক্ত। এসব বন্ডের বিপরীতে ঋণ সুবিধা আছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাধিক মেয়াদে বিনিয়োগের সুবিধা রয়েছে। তিনটি বন্ডেই সর্বোচ্চ এক কোটি টাকার সমপরিমাণ ইউএস ডলার বিনিয়োগ করা যায়। এমনকি দেশে সঞ্চয়পত্র কিনলেও একজন প্রবাসী বিনিয়োগকারী সব ধরনের বন্ড ও সঞ্চয়পত্র মিলিয়ে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসীদের তিন ধরনের বন্ডে গত জুন পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। এই বিনিয়োগের বড় অংশই রয়েছে ১২ শতাংশ সুদের পাঁচ বছর মেয়াদি ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে।

আরো পড়ুন:

অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ২৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *