গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তারই দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর। তিনি বলেন, টাকার লোভে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁদে পড়ে বিএনপি ভেঙে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর তিনি।
সোমবার (১৯ জুন) রাতে নুরুল হক নূর তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন।
‘রেজা কিবরিয়ার অসত্য বক্তব্য ও মিথ্যাচার নিয়ে আমার বক্তব্য নিম্নরূপ’ শীর্ষক স্ট্যাটাসে নুর বলেন, ‘নিজের অপকর্ম ঢাকতে আমাকে নিয়ে রেজা কিবরিয়ার অসত্য বক্তব্য ও মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ। রেজা কিবরিয়া কতটুকু অযোগ্য, সেটা তার কাজকর্মে ইতোমধ্যে আপনারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। গণ অধিকার পরিষদের মতো একটা সম্ভাবনাময় দলের আহ্বায়ক হয়েও তিনি ওইভাবে দলের মিটিং-মিছিল, কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না।’
নুর জানান, রোববার (১৮ জুন) তাদের দলের বৈঠক ছিল। সে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট পরিচয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় জনৈক মাসুদ করিম/এনায়েত করিমের বিএনপি ভাঙা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উকিল আব্দুস সাত্তার মডেলে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কথিত সরকারবিরোধী প্রোগ্রামের নামে রেজা কিবরিয়া ব্যাংকক, কাঠমান্ডুতে একাধিকবার মিটিংয়ে অংশ নেন। দেশে এসে মনোনয়ন বিক্রি ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শওকত মাহমুদের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ এবং সর্বশেষ ইনসাফের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল রেজা কিবরিয়ার বাসায় জরুরি মিটিংয়ে এসব বিষয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়। তিনি সদুত্তর না দিয়ে নেতাদের প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে বাসার ছাদের মিটিং স্থান ত্যাগ করে বাসায় ঢুকে আর মিটিংয়ে আসেনি।’
‘যে কারণে আমরা তার উপস্থিতিতে আর মিটিং করতে পারিনি। তাই উপস্থিত সদস্যদের মতামতে আমরা বাকি আলোচনা সম্পন্ন করি। আজকে পূর্ব নির্ধারিত মিটিংয়ে অসমাপ্ত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হই যে, … মিটিং এখনও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলমান।’
স্ট্যাটাসের বিষয়ে নুরুল হক নূর গণমাধ্যমের কাছে সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে রেজা কিবরিয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে তার পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, পায়ের চিকিৎসায় তিনি বিদেশে আছেন।
স্ট্যাটাসে নুর আরও উল্লেখ করেন, ‘নিশ্চয়ই আপনারা অবগত আছেন, এই রেজা কিবরিয়ার কারণেই গণফোরামও ভেঙে ছিল।’
এদিকে সোমবার (১৯ জুন) রাতে রেজা কিবরিয়াকে সরিয়ে গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে। সোমবার (১৯ জুন) রাতে দলটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ বলেন, সোমবার দলের জরুরি সভায় রেজা কিবরিয়ার পরিবর্তে রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়েছে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, রেজা কিবরিয়ার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সদস্য সচিব হিসেবে থাকছেন নুরুল হক নুর।