প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – বাংলাদেশ যে কোনো বহিরাগত বিবাদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – বাংলাদেশ যে কোনো বহিরাগত বিবাদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে:
সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের জনগণের পাশে দাঁড়ান! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো বহিরাগত হানাদার ও শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের সক্ষমতা অর্জন করেছে।
“আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী, জাতির পিতা আমাদের পররাষ্ট্র নীতি দিয়েছেন ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা’, আমরা সেই পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী, কিন্তু বাইরে থেকে শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে আমরা আমাদেরকে নিরাপত্তা তৈরী করার ক্ষমতা অর্জন করেছি। আমাদের আছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার ক্ষমতা।”
প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৮১তম বিএমএ লং কোর্সের প্রেসিডেন্ট প্যারেড ২০২১-এ ভাষণ দিতে গিয়ে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কার্যত যোগদান করছিলেন।
তিনি নতুন ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রয়োজন হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের প্রধান কাজ হিসেবে আত্মনিয়োগ করতে বলেন।
এই শুভ উপলক্ষে সকল নবীন কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আজ শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মাতৃভূমির মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব তাদের অর্পণ করা হয়েছে।
“এই দায়িত্ব পালনের জন্য আপনাদের সদা সজাগ ও প্রস্তুত থাকতে হবে। আপনাকে দেশের মানুষের পাশে থাকতে হবে! জনগণের সকল প্রয়োজন মেটাতে এবং সুখ-দুঃখ সমানভাবে ভাগ করে নেওয়ার জন্য আপনাকে আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বাধীনতার চেতনাকে সমুন্নত রাখতে এবং একে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখতে বলেন। “আপনাকে নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং আপনার মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে।”
ক্যাডেটদের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের জন্য বিএমএ-তে সব ধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি এই আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক সেনাবাহিনী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ”
শেখ হাসিনা আরও উল্লেখ করেন যে আজকের বিএমএ সেই সামরিক একাডেমির একটি সফল মূর্ত প্রতীক যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচীর বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এর সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীতে তিনটি নতুন পদাতিক ডিভিশন এবং প্রথম প্যারা-কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে যেখানে অত্যাধুনিক যান এবং অন্যান্য সরঞ্জাম, যেমন অত্যাধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সিগন্যালিং সরঞ্জাম, বিভিন্ন অস্ত্র, হেলিকপ্টার, বিমান, আধুনিক পদাতিক গেজেট এবং অন্যান্য বিভিন্ন অস্ত্র সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নতুন অস্ত্র ও সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন ও নির্মাণ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও সরঞ্জাম সংযোজন ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে।
অনুষ্ঠানে ব্যাটালিয়নের ৮১তম বিএমএ লং কোর্সের সিনিয়র আন্ডার অফিসার আব্দুল্লাহ আল ইসলাম সেরা অলরাউন্ড ক্যাডেট হিসাবে “সোর্ড অফ অনার” এবং কোম্পানির জুনিয়র আন্ডার অফিসার ইমরুল কায়েস তার সেরা পারফরম্যান্সের জন্য “সেনা প্রধান স্বর্ণপদক” লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ আবদুল্লাহ আল ইসলামের হাতে ‘সোর্ড অব অনার’ এবং ইমরুল কায়েসকে ‘সেনাপ্রধান স্বর্ণপদক’ তুলে দেন।
