স্বাস্থ্য

প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা : প্রয়োজন সচেতনতার

নিখিল মানখিন, ধূমকেতু বাংলা: প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রসার ঘটাতে নেতিবাচক সামাজিক জড়তা দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্রজনন অঙ্গ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সুস্থ ও সঠিক ধারণা থাকলে সেটা নারী-পুরুষ বিশেষ করে একটি কিশোর-কিশোরীর মানসিক গঠনে সাহায্য করে। তবে বাংলাদেশের সমাজে যুগ যুগ ধরে চলা সামাজিক জড়তার কারণেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিজ্ঞানসম্মত কোনও জ্ঞান ছাড়াই পার করছে। সামাজিক অস্বস্তি ও জড়তার কারণেই প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কথা বলতে বা শেয়ার করতে সংকোচবোধ করেন অনেকে। ফলে বিদ্যমান সমস্যা তীব্রতর হয়ে এক পর্যায়ে চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অকাল মৃত্যু থেকে শুরু করে নানা জটিল সমস্যায় পড়তে হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, প্রজনন স্বাস্থ্য হচ্ছে জীবনের প্রতিটি ধাপে প্রজননতন্ত্র সম্পর্কীয় একটি পরিপূর্ণ দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণের সামগ্রিক ব্যবস্থা। প্রজনন স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় একজন মানুষ সন্তোষজনক ও নিরাপদ যৌন জীবনযাপন করতে পারবে, প্রজননে সক্ষম হবে এবং কখন, কোথায় ও কিভাবে একাজ করবে সে ব্যাপারে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রজনন স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা থেকে বোঝা যায় যে, সকল নারী ও পুরুষের প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়ক সব ধরনের তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে। নিরাপদ, কার্যকরি ও ইচ্ছানুযায়ী সহজলভ্য পরিবার-পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের অধিকার রয়েছে। উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের অধিকার এবং একজন নারীর স্বেচ্ছায় গর্ভধারণ, গর্ভকালীন সেবা এবং সুস্থ শিশু জন্মদানের অধিকার রয়েছে।

পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর জানায়, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসমূহের মধ্যে রয়েছে – পরিবার পরিকল্পনা, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য, পুষ্টি, আরটিআই/এসটিআই ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যা, গর্ভপাত প্রতিরোধ ও গর্ভপাতজনিত জটিলতার ব্যবস্থাপনা, যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা ও সচেতনতা, পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য ও তাদের অংগ্রহণ, স্তন ও প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সারসহ অন্যান্য স্ত্রীরোগের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বন্ধ্যাত্ব ও অন্যান্য যৌন সমস্যা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ।

প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার জন্য করণীয়:

পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর জানায়, নিয়মিত প্রজনন অঙ্গ পরিষ্কার রাখা দরকার। শিশুদেরকে প্রথম থেকেই প্রজনন অঙ্গের যত্ন নিতে অভ্যস্ত করা প্রয়োজন। প্রজনন অঙ্গ যেন ভেজা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার, অন্যথায় ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিতে পারে। প্রতিবার পায়খানা-প্রস্রাবের পর ভালভাবে প্রজনন অঙ্গ পরিষ্কার করা দরকার। প্রজনন অঙ্গে যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে লজ্জা না করে দ্রুত ডাক্তার বা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মীর পরামর্শ নেয়া এবং চিকিৎসা নেয়া দরকার। প্রতিবার যৌন মিলনের পর নারী-পুরুষ উভয়েরই যৌনাঙ্গ ভাল করে পরিষ্কার করা দরকার। নিরাপদ যৌন জীবনে অভ্যস্ত হওয়া একান্ত প্রয়োজন।

প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ সম্পর্কে তথ্য:

পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর জানায়, প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণের মধ্যে রয়েছে- যৌনরোগ ও প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন প্রকারের সংক্রমণ। যৌনমিলনের মাধ্যমে যেসব রোগ বা সংক্রমণ হয় তাদের যৌনরোগ বলে।

যৌনরোগের লক্ষণ পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তায় পুঁজ বা পুরুষাঙ্গে ঘা বা ক্ষত, অন্ডকোষ ব্যথা ও ফোলা, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা, কুচকি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা ইত্যাদি।

যৌনরোগের লক্ষণ নারীর ক্ষেত্রে যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, যৌনাঙ্গে ক্ষত বা ঘা, যোনিপথে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া, তলপেটের দুই দিকে ব্যথা, কুচকি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা, সহবাসের সময় ব্যথা, কোনও কোনও সময় জ্বর ইত্যাদি।

সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়ে পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে কনডম ছাড়া যৌনমিলনের মাধ্যমে, জীবাণুমুক্ত সিরিঞ্জ বা সূঁচ ব্যবহার না করা, আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত শরীরে গ্রহণ করা, আক্রান্ত মা থেকে সন্তানের মাঝে, মাসিকের সময় পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার না করলে, প্রসব বা গর্ভপাতের সময় নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেও এই সংক্রমণ ছড়ায়।

সংক্রমণের সম্ভাব্য জটিলতা নিয়ে পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর জানায়, পুরুষ ও মহিলা উভয়ের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। সন্তান নষ্ট হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়। মৃত সন্তান জন্ম দেবার সম্ভাবনা থাকে। জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হতে পা্রে। পুরুষের মুত্রনালী সরু হয়ে যেতে পারে। যৌনরোগ সন্দেহ হলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মীর পরামর্শ নিতে হবে। অবশ্যই নিজের ও যৌনসঙ্গীর (যদি থাকে) এক সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। প্রয়োজনে যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা উচিত।

কিশোরকিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য:

আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, বাংলাদেশে রয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ কিশোর-কিশোরী। বয়ঃসন্ধি এমন একটা পর্যায় যখন একটি শিশু একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে ওঠতে শুরু করে। এ সময়ই মানুষের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা তৈরি হয়। এই সময়ে ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে, যে কারণে তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধিকালীন সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের সক্ষমতা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়ার মতো নীতি গ্রহণ করা গেলে এই ছেলে-মেয়েরা দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সহিংসতার চক্র ভেঙে ফেলতে পারে।

বাংলাদেশে তিন কোটি ৬০ লাখ কিশোর-কিশোরী রয়েছে, যারা এদেশের মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ। তারপরেও তাদের উপযোগী করে সেবার ব্যবস্থা করার চিন্তা এখনও ততটা গুরুত্ব পায় না। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। বাল্য বিয়ের উচ্চ হারের কারণে বাংলাদেশে বয়ঃসন্ধিকালেই অনেক মেয়ে গর্ভধারণ, সহিংসতা ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে থাকে। বর্তমানে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর বয়সের আগে।  এই বয়সের ছেলে-মেয়ে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরও স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি থাকে।

প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, মানসিক ও সামাজিক বিষয়ে কাউন্সেলিং ইত্যাদির মতো বিষয়ে তারা অবগত নন। এই অবস্থার কারণে বাংলাদেশে অনেক নবজাতকের মৃত্যু হয়। আবার সন্তান প্রসবের পর মা ও শিশু রোগাক্রান্ত হন। বাংলাদেশে বয়ঃসন্ধিকালের তিনজন মেয়ের মধ্যে একজনই রুগ্ন। আর মেয়েদের ১১ শতাংশই অনেক বেশি অপুষ্টির শিকার। তাদের অধিকাংশেরই জিংক, আয়োডিন ও আয়রনের মতো অনুপুষ্টির ঘাটতি রয়েছে।

বৈশ্বিকভাবে দেখা গেছে, পরিণত বয়সের মায়ের গর্ভে সন্তানের মৃত্যুর ঘটনার দ্বিগুণ ঘটে ২০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে ২০ বছরের কম বয়সী মায়েদের প্রতি ১০০০ শিশুর জন্মদানে ৩১ জনের মৃত্যু হয়। ২০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের গর্ভধারণ বা সন্তান প্রসবের সময় মৃত্যুর ঘটনার দ্বিগুণ ঘটে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে, এই হার পাঁচ গুণ হয় ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে।

সমাধানের বিষয়ে ইউনিসেফ জানায়, বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলে-মেয়েদের স্বাস্থ্য সেবার অধিকার নিশ্চিত করতে প্রচারণা, সরকারি নীতিতে এ বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা, উন্নততর সেবা প্রদানের ব্যবস্থা এবং কমিউনিটির ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের জন্য কাজ করছে ইউনিসেফ। যৌবনে পদার্পণকারীদের জন্য সহায়ক স্বাস্থ্য সেবা এবং বিশেষ কিছু জেলায় সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার জন্যও কাজ করা হচ্ছে।

প্রজনন স্বাস্থ্য : বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য নীতিতে তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, তাদের প্রতি সহিংসতা রোধ এবং কিশোরী মায়েদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা এ সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রমের একটি অংশে পুষ্টি, এইচআইভি, পয়ঃনিষ্কাশন, ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা, জীবন দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষা এবং গণমাধ্যমে অংশগ্রহণের মতো বিষয়ও রয়েছে। প্রতিবন্ধী কিশোর-কিশোরীরাও যাতে এসব সেবা পায় সে বিষয়টিও এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

দুই পর্যায়ে সহায়তার ওপর গুরুত্ব দেয় ইউনিসেফ। প্রথমত, সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সরকারকে সহায়তা করা হয়। যেমন, নীতি সংশোধন, কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কর্মসূচি তৈরি।

দ্বিতীয়ত, যেসব জেলায় বাল্য বিয়ের হার অনেক বেশি সেসব জেলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেশের মধ্যে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ। স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে ইউনিসেফ। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য, উন্নয়ন, সুরক্ষা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার আছেন তাদের দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য ইউনিসেফ সেবা দাতা ও সামনের কাতারের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এছাড়া স্কুলে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ, হাত ধোয়ার জায়গায় সাবান রাখা ও স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে প্রচারপত্র ইত্যাদির মতো বিষয়গুলো যাতে ঠিকঠাক মতো হয় সেজন্য সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে ইউনিসেফ। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো কেনা, বিতরণ এবং তা তদারক করা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে কাজ করা হয় বলে জানায় ইউনিসেফ।

পাঠ্যপুস্তকে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবামূলক বিষয় পড়ানোর সমস্যা নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ধারণা দেয়া আছে। তবে ক্লাসে শিক্ষকেরা অনেকেই বিষয়টি পড়াতে অস্বস্তি বোধ করেন। প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে পরিবার থেকে শেখানো হবে নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিখবে সেটা নিয়ে যেমন বিতর্ক রয়েছে, তেমনি প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে শেখার ফলে ছেলে-মেয়েদের লাভ হবে নাকি উল্টো ক্ষতি হবে সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে।

বিশেষজ্ঞরা যা বলেন

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু ধূমকেতু বাংলাকে বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য মূলত নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, প্রচার, পরামর্শ, স্বল্পমূল্য ও বিনামূল্যে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার কারণেই নারীরা এখন প্রজনন স্বাস্থ্যে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছেন। এটা একটা জাতির জন্য খুবই ভালো দিক।

তিনি আরো বলেন, সারা দেশে বর্তমানে ৯০৩টি কৈশোরবান্ধব কেন্দ্র আছে। এসব কেন্দ্র থেকে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। পুরো দেশে এমন কেন্দ্রের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের জন্য সেবা কার্যক্রম চালাতে সরকারের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু উদ্যোগের পাশাপাশি সচেতনতাও জরুরি।

সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার ধূমকেতু বাংলাকে বলেন, শুধু প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা নয়, নারীর সকল প্রকার অধিকার নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার প্রযোজনীয় সকল পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দেশে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। এই করোনা পরিস্থিতির শুরুতে গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলছে।

বারডেম হাসপাতালের গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শামসাদ জাহান ধূমকেতু বাংলাকে বলেন, দেশের ৫০ শতাংশ নারী প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গর্ভপাত, জরায়ুর মুখে আঘাত, জরায়ু ও প্রজননপথের মুখ ফেটে যাওয়া প্রভৃতি। তিনি আরো বলেন, তবে বর্তমানে নারীরা এ বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গর্ভবতী নারীরাও এখন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে অনেক বেশি সচেতন। ফলে আগের তুলনায় প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা কমছে।

উপসংহার : বাংলাদেশে প্রজনন স্বাস্থ্য

হ্যাঁ এটা ঠিক যে, আমরা প্রজনন স্বাস্থ্যের মতো মানবজীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যুকে নানাভাবে অবজ্ঞা করছি, যা লাখ লাখ মানুষের জীবনকে ধ্বংস করছে। সচেতনতাই এ ক্ষেত্রে অনেক জীবন বাঁচাতে পারে এবং ভালো সমাধান দিতে পারে। প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে যদিও পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমাদের দেশে কিছু বাধা আছে; ব্যাপক সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে সংস্কৃতিগত এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করা যেতে পারে। শুধু সরকারই নয়, একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমোদেরকেও এই ইস্যুতে কথা বলতে হবে।

এ বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতা দূর করা উচিত!

আরো পড়ুন:

২৪ ঘণ্টাই জরুরি স্বাস্থ্যসেবা মিলবে বিএসএমএমইউতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *