শিল্প ও বাণিজ্য

পোশাক খাতের প্রণোদনা প্যাকেজ স্বচ্ছ করার দাবি

ধূমকেতু প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি পোষাতে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত এক গবেষণায় তাদের এসব দাবি উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার ওয়েবিনারে ওই গবেষণার ফল তুলে ধরেন গবেষক দলের প্রধান ও বিআইজিডির সিনিয়র ফেলো অব প্র্যাকটিস মাহীন সুলতান।

বিআইজিডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই ওয়েবিনারের বিস্তারিত জানিয়ে বলা হয়, কারখানাভিত্তিক ও জাতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো থেকে মোট ২০ জন (১০ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ) শ্রমিক নেতার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে গবেষণায়।

একইসঙ্গে প্রণোদনার গাইডলাইন, বিভিন্ন গবেষণাপত্র, সংবাদপত্র, অন্যান্য প্রিন্ট ও ডিজিটাল মাধ্যম থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, বেশিরভাগ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজকে ‘সময় উপযোগী পদক্ষেপ’হিসেবে প্রশংসা করলেও ‘প্রণোদনা প্যাকেজের পর্যাপ্ততা’নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এই প্রণোদনা প্যাকেজে তিন মাসের মজুরির জন্য প্রয়োজনের মাত্র ৫১ ভাগ পূরণ করা সম্ভব বলেই মনে করছেন শ্রমিক নেতারা।

যেসব ছোট কারখানার শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদেরই সহযোগিতা বেশি দরকার বলে মন্তব্য করেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু বাস্তবে মালিক সমিতির তালিকাভুক্ত সদস্য এবং বড় বড় কারখানা সরকারি যে কোনো সুযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে বলে পর্যবেক্ষণ তাদের।

এ কারণে যেসব শ্রমিক ও কারখানার প্রণোদনা বেশি দরকার তাদেরকে টার্গেট করে প্রণোদনা প্যাকেজের সর্বোচ্চ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রণোদনা প্যাকেজটি ঋণ হওয়ার কারণে কারখানার মালিকরা হয়ত ঋণের আবেদনের পরিবর্তে কারখানা বন্ধ কিংবা শ্রমিক ছাঁটাই করা শ্রেয়তর মনে করতে পারেন। শ্রমিককে আসলে কত টাকা দেওয়া হবে তা নিয়েও শ্রমিক নেতাদের মাঝে উদ্বেগ রয়েছে।

“যদি শ্রমিকদের নিয়মিত মজুরির চেয়ে কম দেওয়া হয়, সেটা তাদের টিকে থাকার জন্যে যথেষ্ট হবে না।”

৩ মে এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুললেও এখনো বহু শ্রমিক মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের আওতার বাইরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

প্রণোদনা প্যাকেজে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের সুপারিশ করে গবেষকরা বলছেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক কোন কারখানাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে সেই তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।

“ব্যাংকগুলো প্রতি সপ্তাহে কত টাকা দেওয়া হয়েছে সেটা প্রকাশ করবে। কল-কারখানা অধিদপ্তর এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে এবং তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে তুলে ধরবে।”

বিআইজিডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান মতিনের পরিচালনায় ওয়েবিনারে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আক্তার, ডিআইএফই-র ডিআইজি মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হাবিবুর রহমান, বিকেএমইএর পরিচালক ফজলে শামিম এহসান, গবেষক শাহনেওয়াজ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, কবিতা চৌধুরী, জান্নাতুন নাঈম ও ফারাহ হক অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *