সিলিন্ডারের গ্যাসের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে তিন শিশু ভাই-বোন। তাদের মরদেহ গতকাল ভালুকা থেকে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দার বেখরীকান্দা শুনই গ্রামে আনার পর মা-বাবাসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি : কালের কণ্ঠ
সিলিন্ডারের গ্যাসের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে তিন শিশু ভাই-বোন। তাদের মরদেহ গতকাল ভালুকা থেকে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দার বেখরীকান্দা শুনই গ্রামে আনার পর মা-বাবাসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি : কালের কণ্ঠ
স্বপন ও মদিনার তিন ছেলেমেয়ে। অভাবের সংসার
আয়-রোজগার তেমন ছিল না বললেই চলে। তবু তাঁরা স্বপ্ন দেখতেন, সন্তানরা শিক্ষিত হবে। সুদিন ফিরিয়ে আনবে পরিবারে। এই আশা পূরণে তাঁরা ময়মনসিংহের ভালুকার সিড স্টোর এলাকায় যান। ঘর ভাড়া নেন। কাজ খুঁজে নেন। বাড়তি আয়ের জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করছিলেন। কিন্তু রবিবার মুহূর্তের আগুনে প্রাণ গেছে তিন সন্তানের।স্বপন মিয়া ও মদিনা বেগমের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের বেখরীকান্দা শুনই গ্রামে। তাঁদের তিন স
সন্তানের নাম সাদিয়া আক্তার (৮), নাদিয়া আক্তার (৫) ও রায়হান (২)। গতকাল সোমবার সকালে ময়মনসিংহ থেকে তিন শিশুর লাশ বেখরীকান্দা শুনই গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় লাশ দেখার জন্য আশপাশের শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করে। বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
স্বপনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন মাস আগে কাজের সন্ধানে স্বপন তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সিড স্টোর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। সেখানে তাঁর স্ত্রী মদিনা একটি গার্মেন্টে কাজ নেন। আর স্বপন দিনমজুর হিসেবে কাজ করছিলেন। পাশাপাশি তিনি গার্মেন্টে কাজ করার প্রশিক্ষণও সংসার চালানো কষ্টকর ছিল। তাই নিজেও একটি গার্মেন্টে কাজ নিই। দুর্ঘটনায় আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। ’
এদিকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা স্বপনের বাড়িতে ছুটে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই। সহোদর তিন শিশুর লাশ চেনার কোনো উপায় ছিল না। পরিবারের আবেদনে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হয়েছে।
ভালুকা উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহাম্মেদের ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয়দের নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি।