বিনোদন

পুরনো আঞ্চলিক গানের রেকর্ড সংগ্রহ করার নেশা

চরিত্রের প্রয়োজনে সকাল থেকে দুপুর অবধি গরমে বসিয়ে রেখেছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। পুরনো দিনের সেই সব কথার ভিড় বর্ষীয়ান নায়কের মনে।

‘মাসখানেক আগে ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তরুণ মজুমদারকে নিয়ে তথ্যচিত্র হওয়ার কথা ছিল। সেখানে ওঁর সম্পর্কে আমি কিছু বলি, চেয়েছিলেন তরুণবাবু। কথা ছিল, এই মাসেই শ্যুটিং হবে। সেই কাজটা আর করা হল না।’’

আক্ষেপ বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। টালিগঞ্জ থেকে মুম্বই– তাঁর দীর্ঘ যাত্রাপথের সঙ্গী তরুণ মজুমদার। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছ থেকে পাওয়া বহুদিনের সঙ্গীর প্রয়াত হওয়ার খবরে চোখের জল আটকাতে পারেননি বর্ষীয়ান অভিনেতা। ভেজা কণ্ঠেই স্মৃতির সরণি ধরলেন।

তরুণবাবুর বিয়েতেও নিমন্ত্রিত ছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। কাজের জগতের বাইরেও সন্ধ্যা-তরুণের সঙ্গে নিছক আড্ডায় সময় কেটেছে তাঁর। সেই আড্ডায় কেমন ছিলেন আপাত-গম্ভীর মানুষটি?

‘আউটডোরে তরুণবাবু ছিলেন অন্য মানুষ। আপাত-গম্ভীর মানুষটা মজা করতে ভালবাসতেন। নিজে গম্ভীর থাকতেন, কিন্তু ওঁর কথা শুনে সবাই হাসত। আউটডোরে গিয়েই ঘুরতে বেরোতেন, সেখানকার আঞ্চলিক গানের পুরনো গানের রেকর্ড সংগ্রহ করতেন। এটাই ছিল ওঁর নেশা। ছবি পরিচালনার পাশাপাশি সঙ্গীত নিয়েও তরুণ মজুমদারের অসাধারণ জ্ঞান ছিল। বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীতে।

তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় হিন্দি ছবি ‘রাহগীর’-এ নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন বিশ্বজিৎ। এই চরিত্রের জন্য মুম্বইয়ের নায়ককে ঝুল-কালিও মাখতে হয়েছিল। সেই ছবির শ্যুটিংয়ের কথাই এখনও স্ম়ৃতিতে উজ্জ্বল বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের।

তখন আমি মুম্বইয়ের নায়ক, হাতে গিটার নিয়ে গান করছি… এমন ইমেজ। অথচ ‘রাহগীর’-এর চরিত্রে আমাকে ছেঁড়া জামা পরতে হয়েছে। গায়ে কালিও মাখতে হয়েছে। দু’দিন খেতে না পাওয়ার কষ্ট বোঝাতে আমাকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাইরে গরমের মধ্যে বসিয়ে রেখেছিলেন তরুণদা। উনি শুধু মানসিক নয়, শরীরিক ভাবেও ওই চরিত্রের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। ‘কুহেলি’ ছবিতেও চরিত্রের প্রয়োজনে আমার শখের দাড়ি ছোট করে ফেলতে হয়েছিল।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *