খাদ্য-পুষ্টি

পুদিনা পাতা কেন খাবেন? জেনে নিন এর উপকারিতা ও অপকারিতা (ভিডিও)

খাদ্য ও পুষ্টি প্রতিবেদক: মিন্ট বা পুদিনা ফ্লেভারের চুইংগাম আমাদের সকলেরই প্রিয়। মুখকে ফেশ রাখতে যে, পুদিনার জুড়ি নেই তা আমরা সকলেই জানি। গরমকালে ঘেমে-নেয়ে বাড়ি আসার পর যদি কেউ পুদিনার শরবত করে দেয়, তাহলে তো কথাই নেই! পুদিনা আমাদের শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে।

পুদিনা পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে যা ক্যান্সার, হৃদরোগ, অ্যালঝাইমারসের মতো ভয়ংকর রোগের হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে। এছাড়া পুদিনা পাতায় যে অ্যাসেনশিয়াল অয়েল থাকে তাও নানাভাবে আমাদের উপকারে লাগে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক পুদিনা পাতা খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা।

 

১. হজমশক্তি বাড়াতে

খাবার পর আপনার কি বদহজমের সমস্যা লেগেই থাকে? ওষুধ খেয়েও কোনো উপকার পান না? পুদিনা পাতায় প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস থাকে যা আমাদের খিদে ও হজমশক্তি বাড়ায়। পুদিনার সুন্দর গন্ধ মুখের মধ্যে থাকা লালাগ্রন্থি থেকে লালা ও পুদিনার মধ্যে থাকা মেন্থল আমাদের খাদ্য পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক বা এনজাইমগুলির নিঃসরণের কাজে সাহায্য করে। এছাড়া পুদিনা খাদ্যনালীর পেশীর সংকোচন ও প্রসারণের ক্ষমতা বাড়ায় ও বদহজমের সমস্যা দূর করে। এ কারণে পুদিনা পাতাকে রান্নায় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। খাবার পর আপনি যদি এক কাপ করে মিন্ট টি খান, তাহলে খুব শীঘ্রই হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

 

২. ত্বকের যত্নে

পুদিনার রস আমাদের ত্বককে পরিষ্কার রাখে ও চুলকানি, নানারকম ইনফেকশনের হাত থেকে ত্বককে মুক্তি দেয়। পুদিনার রস অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, এতে থাকা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড পিম্পল বা ব্রণের হাত থেকে ত্বককে মুক্তি দেয়, ব্ল্যাকহেড দূর করে। পুদিনায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে ও ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করে। পুদিনা ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে ও আরাম দেয়, সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে তাই পুদিনা যুক্ত ক্লিনসার, টোনার, লিপবাম ও ক্রিম ব্যবহার করুন।

https://www.youtube.com/watch?v=d__5-2ZdcsA

 

৩. সর্দিকাশি থেকে বাঁচতে 

আপনার যদি সর্দিকাশির ধাত থাকে তাহলে সর্দির সময় গরম জলে এক ফোঁটা মিন্ট এক্সট্রাক্ট ফেলে তাতে ভাপ নিন। দেখবেন চটজলদি উপকার পাচ্ছেন। পুদিনার গন্ধ সর্দির সময় নাক, গলা ও ফুসফুসে জমে থাকা কফ ও শ্লেষ্মা দূর করে। পুদিনার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ কাশির সময় শ্বাসনালীর জ্বালা কমিয়ে আরাম দেয়। এছাড়া হাঁপানির ওষুধ হিসেবেও পুদিনাকে ইনহেলারের মধ্যে ব্যবহার করা হয়। পুদিনার রিফ্রেশিং গন্ধ খুব তাড়াতাড়ি বমিভাব কাটাতে সাহায্য করে। এছাড়া আপনার যদি মাথাধরা বা মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে পুদিনা যুক্ত ক্রিম বা বাম মাথাধরার সময় কপালে লাগিয়ে রাখলে আরাম পাবেন।

. মুখের যত্নে

পুদিনা মুখের মধ্যে থাকা জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। পুদিনার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে, দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, দাঁত ও জিভ পরিষ্কার রাখে এবং মাড়িকে সুস্থ রাখে। দাঁতের সমস্যা দূর করার জন্য রোজ কয়েকটা পুদিনা পাতা কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া টুথপেস্ট কেনার সময় তাতে পুদিনা আছে কিনা দেখে কিনুন।

. স্তনের যত্নে প্রেগন্যান্সিতে

শিশুকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে কি আপনার স্তনবৃন্ত খসখসে হয়ে গেছে বা ব্যথা হয়ে গেছে? তাহলে পুদিনার তেল ব্যবহার করুন। বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে পুদিনার তেল এসময় স্তনের যত্নে সাহায্য করে। প্রেগন্যান্সির সময় বমিভাব দূর করতে, মর্নিং সিকনেস কাটাতে ও খাবার হজম করাতেও পুদিনা সহায়তা করে।

সুগন্ধির জন্য পুদিনা পাতা অনেক বেশি জনপ্রিয়। পুদিনা পাতার তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই কিন্তু অধিক মত্রায় গ্রহণে যৌন জীবনের জন্য এটি মোটেও ভালো নয়। এটি শরীরে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হরমোন টেসটোসটের মাত্রা কমিয়ে দেয়। যা শরীরকে ঠাণ্ডা করে দেয় এবং যৌন আগ্রহ কমিয়ে দেয়। তাই সুগন্ধির জন্য পুদিনা বাদ দিয়ে আদা খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন:

জেনে নিন লবঙ্গ খাওয়ার শত উপকারিতা (ভিডিও)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *