অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ন্যূনতম দুই শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ না করে পদে থাকায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৯টি কোম্পানির ১৭ জন পরিচালককে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ৯ কোম্পানির ১৭ পরিচালককে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে আদেশ জারি করেছে বিএসইসি।
“বিএসইসি থেকে রেজিস্টার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ, দুই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ- ইডরা’র কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”
বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, এই ১৭ পরিচালককে শিগগিরই অপসারণ করা হতে পারে।
আইন অনুযায়ী, পরিচালক থাকতে হলে কোম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় রাখতে হয়। এই শর্ত পূরণ না করে পদে থাকা ২২ কোম্পানির ৬১ পরিচালককে ন্যূনতম শেয়ারধারণের শর্তপূরণের জন্য ২ জুলাই ৪৫ কর্মদিবস সময় বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি।
২ সেপ্টেম্বর শেষ কর্মদিবস হলেও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল।
বেঁধে দেওয়া সময়ে ৬১ জনের মধ্যে ২৫ পরিচালক শর্তপূরণ করেছেন। ১৯ পরিচালক ব্যর্থ হয়ে পদ ছেড়েছেন।
বাকি ৯ কোম্পানির ১৭ পরিচালক কোনোটাই করেননি বলে বিধি অনুযায়ী তাদের অপসারণের নির্দেশ দিল বিএসইসি।
যে ২২ কোম্পানির পরিচালকদের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল বীমা খাতের। এগুলো হলো- এশিয়া ইনস্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্স, দুলামিয়া কটন, ইস্টার্ন ইনস্যুরেন্স, এক্সিম ব্যাংক, ইমাম বাটন, ইনটেক লিমিটেড, কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্স, কে অ্যান্ড কিউ, মেঘনা লাইফ ইনস্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইনস্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রভাতী ইনস্যুরেন্স, ইউনাইটেড এয়ার, ফু–ওয়াং সিরামিকস, পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্স, ওয়াটা কেমিক্যালস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ও প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স।
২০১০ সালের পুঁজিবাজার ধসের পরের বছর নভেম্বরে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের মিলিতভাবে কোম্পানির সর্বনিম্ন ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণ বাধ্যতামূলক করা হয়। সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র পরিচালক ছাড়া অন্যদের প্রত্যেককে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
গত বছর মে মাসে আইনে সম্পূরক সংযোজন এনে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকলে শেয়ার বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া বা উপহার হিসেবে শেয়ার হস্তান্তর এবং বোনাস শেয়ার দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়।
এককভাবে কোনো পরিচালকের ২ শতাংশ শেয়ার না থাকলে বেঁধে দেওয়া সময়ের পর তার পরিচালক পদ শূন্য হবে। এর এক মাসের মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণকারী কেউ তা পূরণ করবে।