জাতীয়সর্বশেষ

পায়রা সেতু উদ্বোধন আজ


দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু আজ (রোববার) যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (২৪ অক্টোরব) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এই সেতু উদ্বোধন করবেন। তিনি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
পায়রা নদীর ওপরে নির্মিত এই সেতু উদ্বোধন করলে ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে নির্বিঘ্নে ভ্রমণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বা পায়রা সমুদ্রবন্দর যেতে ফেরি লাগবে না। বরিশাল থেকে দুই ঘণ্টায় পৌঁছানো যাবে কুয়াকাটা। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে যাবে বরিশালসহ দক্ষিণের ছয় জেলা।
এছাড়াও পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকার থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এখন পদ্মা নদী পারাপারের সময় ছাড়া ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে ৫ ঘণ্টা লাগবে। পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে ৪ ঘণ্টার মতো লাগতে পারে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জানা গেছে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতুর আদলেই এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল পদ্ধতিতে পায়রা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুতে থাকা ১৬৭টি বক্স গার্ডার সেগমেন্টের কারণে দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি শূন্যে ভেসে আছে। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের বেশ কিছু পাইল।
এসব পাইল পদ্মা সেতুতে বসানো পাইলের থেকেও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। ৩২টি স্প্যানের মূল সেতুটি বিভিন্ন মাপের ৫৫টি টেস্ট পাইলসহ ১০টি পিয়ার পাইল ও পিয়ার ক্যাপের ওপর নির্মিত।
পায়রা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই সেতু নির্মাণে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে ৮২ শতাংশ অর্থায়নে ছিল কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এ্যাপেক্স ফান্ড। ২০১৩ সালের ১৯ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটের দক্ষিণ পাশে এই সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
২০১৬ সালের ২৪ জুলাই সেতুর কাজ শুরু হয়। ৩ দফা সময় বাড়ানোর ফলে সেতুটি নির্মাণে সময় লেগেছে ৮ বছর। জয়েন্ট ভেঞ্চারে সেতু নির্মাণে লিডিং ঠিকাদার চীনের লো ঝিয়াং কোম্পানি। সেতুর অধিকাংশ মালামালও এসেছে চীন থেকে। সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে এলাকায় সাধারণ মানুষসহ গাড়ি চালকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বলেন, সর্বোচ্চ জোয়ারেও নদীর উপরিভাগ থেকে ১৮.৩০ মিটার উঁচুতে থাকবে এ সেতুটি। ৪ লেনবিশিষ্ট এই সেতুর উভয় পাশে নির্মিত হয়েছে ১ হাজার ২৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের অ্যাপ্রোচ সড়ক। সেতুতে মনোরম আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেতুর আলোতে ঝলমল করছে পায়রা নদী-সংলগ্ন এলাকা। দেশে এই প্রথম পায়রা সেতুতে বসানো হয়েছে হেলথ মনিটরিং সিস্টেম। ভূমিকম্প, বজ্রপাত এবং ওভারলোডেড গাড়ির ক্ষেত্রে এই সিস্টেম আগাম সংকেত দেবে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে সেতুটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *