জাতীয়সর্বশেষ

পানিতে কোনো সমস্যাই নেই বলছেন ওয়াসার এমডি

পানিতে কোনো সমস্যাই নেই বলছেন ওয়াসার এমডি

ওয়াসার পানিতে কোনো সমস্যাই নেই বলছেন ওয়াসার এমডি আর এদিকে পানিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ময়লা ও দুর্গন্ধ। প্রতিদিনকার কাজে ঘটছে ব্যাঘাত, সেই সঙ্গে নিয়মিত এ পানি ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

দিনে পাঁচ থেকে ছয় বার ওয়াসার লাইন থেকে পানির সঙ্গে আসে কেঁচো। সেগুলো সরিয়ে নিত্যদিনের রান্না সারেন জুরাইনের বাসিন্দা রোজিনা বেগম। পরিবারের চার সদস্যের রান্না করতে প্রতিদিনই পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

এ সমস্যা থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে নিয়েছেন রোজিনা বেগম। কিন্তু এতে কেঁচো সরাসরি বাইরে না এলেও দুর্গন্ধ তো আছে। আর কাপড় খুললেই আবার বেরিয়ে আসে কেঁচোর স্তূপ। ফলে কয়েক স্তরে ব্যবস্থা নিয়েও রেহাই মিলছে না দুর্গন্ধ আর কেঁচো থেকে।

ট্যাপের মুখ পরিষ্কার করতেই করতেই সময় সংবাদের সঙ্গে কথা হয় রোজিনা বেগমের। বলেন, ‘এখন তো অনেক কম কেঁচো এসেছে, একটু আগেও আমি পরিষ্কার করেছি। গতমাস থেকেই চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে দিন পার করছি আমরা।’

এ তো গেল রোজিনা বেগমের কথা। একই এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ দেওয়ানের অবস্থাও কোনো অংশে কম না। দুর্গন্ধ পানিতে মুসুল্লিদের অজু করতেও পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। বারবার ট্যাংকি পরিস্কার করেও মিলছে না সুফল। তাই এ এলাকার প্রায় সবাই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে রেখেছেন পরিষ্কার পানি পেতে।

জুরাইন ৫৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইমা চৌধুরী। নয় বছরের ইমা বিকেল পাঁচটার আগ থেকেই বিশুদ্ধ পানি নেওয়ার জন্য পাম্পে অপেক্ষা করছে। এসময় তার সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, প্রতিদিনই বাসার খাবার পানির জন্য জুরাইন কমিশনার রোডের বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। বাসায় লাইনের পানি দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত হওয়ায় পান করা যায় না।

রাজধানীর জুরাইন এলাকার ৫১ থেকে ৫৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা দিন পার করছেন একই সমস্যায়। ওয়াসার ঘোলাটে আর দুর্গন্ধ পানি মুখে নেওয়া তো দূরের কথা এমনকি ফুটিয়েও খাওয়া যায় না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

তারা জানান, এ পানি খাওয়ার অযোগ্য, এমনকি গোসল ও ওজুও করা যায় না। ফলে কেউ কেউ গোসল না করেই দিনের পর দিন পার করছেন। এতে তীব্র গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

পানিতে দুর্গন্ধ থাকলেও তা পানযোগ্য বলে দাবি করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে সময় সংবাদকে তিনি বলেন, পানিতে অ্যামোনিয়ার একটা অতিরিক্ত গন্ধ থাকে, একটা দুর্গন্ধ বলা যাবে না। তবে এটি মানুষ পছন্দ করে না। এ হারও কোনো কোনো জায়গায় কোনো কোনো সময় পাঁচ থেকে দশ ভাগ। এ ছাড়া সব ঠিকই থাকে বলে দাবি ওয়াসার এমডির।

কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতার কারণে এখানে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকটে জুরাইনবাসী। দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান চান রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *