আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং দখল করল তালেবান

আফগানিস্তানের পাকিস্তান সীমান্তে কৌশলগত এক গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং দখল করে নেওয়ার দাবি করেছে তালেবান। যদিও আফগান সরকার গণমাধ্যমের ওই খবর নাকচ করে দিয়েছে। তবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় যোদ্ধাদের বিশ্রাম নিতে এবং তালেবানের পতাকা ওড়াতে দেখা গেছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী তাদের সেনাদের প্রত্যাহারের কাজ জোরদার করার পর থেকে তালেবান যোদ্ধারা একের পর এক এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন।

আজ বুধবার স্পিন বোল্ডাক নামের ওই সীমান্ত ক্রসিংটি দখল করার কথা জানায় তালেবান। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আফগান সেনাদের হটিয়ে দিয়ে তালেবান যেসব সীমান্ত ক্রসিং দখল করেছে, স্পিন বোল্ডাক সেগুলোর মধ্যে সর্বশেষ।

কান্দাহার প্রদেশে কয়েক দিন ধরে আফগান সেনা ও তালেবানের মধ্যে তীব্র লড়াই চলার পর গতকাল পাকিস্তান সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং স্পিন বোল্ডাক দখলের কথা জানাল তালেবান। এর আগে কান্দাহারের রাজধানীর পতন ঠেকাতে সেখানে কমান্ডো যোদ্ধাদের পাঠাতে বাধ্য হয় সরকার। তবে এটিও দখলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে তালেবান।

ইতিমধ্যে এক বিবৃতিতে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন যে তাঁরা নিরাপদ।

ওদিকে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারেক আরিয়ান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সীমান্ত এলাকার কাছে তালেবানের কিছু আনাগোনা আছে। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হামলা প্রতিহত করেছে। তবে স্পিন বোল্ডাকের বাসিন্দারা সরকারের এই দাবির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। রাজ মোহাম্মদ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘আজ সকালে আমি আমার দোকানে যাই। দেখি সব জায়গায় তালেবান যোদ্ধারা। তাঁরা বাজারে, পুলিশ সদর দপ্তরে, কাস্টমস এলাকায়—সবখানে। কাছাকাছি স্থানে লড়াই চলার শব্দও আমি শুনেছি।’

তালেবানের জন্য এ ক্রসিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এ পথ দিয়ে সরাসরি পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে যাওয়া যায়। বেলুচিস্তানে পাকিস্তানি তালেবানের শীর্ষ নেতাদের বসবাস। পতনের পর এই ক্রসিংয়ের পাকিস্তান প্রান্তে প্রায় দেড় শ তালেবান যোদ্ধাকে পতাকা হাতে মোটরসাইকেলে মহড়া দিতে দেখা যায় বলে এএফপির সংবাদদাতা জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে দেশটিতে সরকারি সেনা ও তালেবানের মধ্যে লড়াই বেড়ে গেছে। আফগানিস্তানে ২০ বছরের আগ্রাসন শেষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন সেনাদের দেশটি ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে তালেবানের দাবি, তারা আফগানিস্তানের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *