ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: বিজেপির অনেক আশা ছিল এবার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসবে। শুধু বিজেপি-র কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারাই নয়, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ-আরএসএস পরিবারও অনেকটাই নিশ্চিত ছিল জয় নিয়ে। তবে অনেক হিসেব-নিকেশ, অনেক পরিকল্পনা করা সত্বেও কাঙ্খিত ফলের কাছাকাছিও যেতে পারেনি গেরুয়া শিবির। ফলাফল এমন কেন হলো তা নিয়ে দলের ভেতরে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। তাতে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে ৫টি কারণ।
১. মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন সে বিষয়টি খোলাসা করতে না পারা। এই সিদ্ধান্ত ছিল বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা বারবার বাংলার ‘ভূমিপুত্র’-ই মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে জানালেও আলাদা করে কারও নাম বলেননি। অন্যদিকে, তৃণমূলের মুখ ছিলেন ১০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী থাকা লড়াকু নেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বাংলার মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২. বাংলার কোনও নেতাকে মুখ হিসেবে তুলে না ধরার জন্য নীলবাড়ির লড়াইয়ে বড় বেশি নির্ভরতা ছিল কেন্দ্রীয় নেতদের উপরে। আর সেই নির্ভরতাকে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি প্রাথমিকভাবে মনে করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের এই আক্রমণকেই সমর্থন দিয়েছে বাংলার মানুষ।
৩. রাজ্য বিজেপি আরও একটি কারণকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দলের বক্তব্য, ২০১৬ সালে বিজেপি রাজ্যে মাত্র ৩টি আসনে জিতেছিল। সেখান থেকে একেবারে ক্ষমতায় আসার যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল তা দলের অভিজ্ঞতার তুলনায় অনেকটাই বেশি। লোকসভা নির্বাচনের ফলকে বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রেও প্রাধান্য দেয়া ঠিক হয়নি। তাই এই হারকে বড় মনে হচ্ছে।
৪. মেরুকরণকে হাতিয়ার করে নীলবাড়ির লড়াইয়ে ফায়দা করতে চেয়েছিল বিজেপি। প্রচার পর্বে অনেক ক্ষেত্রেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণের অভিযোগ তুলতে কড়া ভাষা প্রয়োগ করেছেন নেতারা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে এর ফলে মুসলিম ভোট একাট্টা হলেও হিন্দু ভোটের সিংহ ভাগ ঝুলিতে টানতে পারেনি।
৫. বিজেপি-তে ‘আদি ও নব্য’ বিবাদ অনেক দিনের। গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই এই অভিযোগ নিয়ে দলের মধ্যে অনেক গোলযোগ হয়েছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে তৃণমূল থেকে যারা এসেছেন তাদের প্রাধান্য দেয়া দলের কর্মী, সমর্থক এবং ভোটাররা ভাল চোখে নেয়নি বলেই মনে করছে বিজেপি। একই সঙ্গে রাজ্য নেতাদের বক্তব্য, রাজ্যের সর্বত্রই প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে অনেক ভুল ছিল।
সূত্র: আনন্দবাজার।