প্রচ্ছদ

পশ্চিমবঙ্গে গড়ে এক টন ইলিশ ধরা পড়ছে রোজ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: ভারতের দিঘায় প্রায় প্রতিদিনই গড়ে এক টন করে ইলিশ ধরা পরছে। এতে বেশ খুশি ওপার বাংলার মানুষ। মৌসুম পেরিয়ে গেলেও পশ্চিম বঙ্গের বাজারগুলতে গেলেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ। ক্রেতারা বলছেন ভরা বর্ষাতেও তো এই দামে এমন ইলিশ পাননি। তাই অধিকাংশ ক্রেতাই বাড়ি ফিরছেন ব্যাগ ভর্তি ইলিশ নিয়ে।

নভেম্বরের শেষে এ রকম ইলিশে ধরা পরায় বেশ আনন্দিত মানিকতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী প্রদীপ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘ভরা বর্ষায় ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের মাছের দাম ছিল এখনের তুলনায় কেজি প্রতি তিনশো টাকা বেশি। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম কেজি প্রতি চারশো বেশি। এখন ইলিশ মূলত আসছে ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপের সমুদ্র থেকে। ওই সময়ে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি থাকায় দাম বেড়েছিল। আর এখন, দুর্গাপুজার পর থেকে সরস্বতী পুজা পর্যন্ত অনেকে সংস্কার মেনে ইলিশ খাওয়া বন্ধ রাখেন। ফলে চাহিদা কম থাকে বলে দামটাও এখন কম।”

মানিকতলার পাশাপাশি উল্টোডাঙা, কলেজ স্ট্রিট, গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট-সহ শহরের বিভিন্ন বাজারে গত দু’দিন ধরে চলছে ইলিশের দাপট। এক কেজি থেকে দেড় কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ রুপিতে। পাঁচশো থেকে সাতশো গ্রামের ইলিশের দাম কেজি প্রতি হাজার রুপি।

দিঘা ফিশারম্যান ও ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাসের বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরে রোজ গড়ে এক টন করে ইলিশ উঠছে দিঘার সমুদ্র থেকে। এই সময়ে এত ইলিশ আগে দেখা যায়নি।’

ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতি জানিয়েছেন, দিঘার তুলনায় গত দু’দিনে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ডহারবার, রায়দীঘির সমুদ্র থেকে সবথেকে বেশি ইলিশ জালে উঠছে। তিনি বলেন, ‘‘গত তিন দিনে এই সমস্ত এলাকা থেকে সব মিলিয়ে প্রায় সত্তর টন ইলিশ উঠেছে। বেশিরভাগের ওজন পাঁচশো থেকে সাতশো গ্রাম। স্বাদেও হার মানাচ্ছে বর্ষার ইলিশকে।”

বৈঠকখানা মাছ বাজারের আড়তদার বিজয় সিংহ জানিয়েছেন, বর্ষায় ইলিশের থেকে দামে কম, স্বাদে বেশি। গত এক মাসে ভাল পরিমাণে আমদানিও হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়ার পরিবর্তনই রুপালি শস্যের আচমকা আমদানির কারণ, বলছেন মৎস্য গবেষক ও শিক্ষকেরা। কেন্দ্রীয় মৎস্যশিক্ষা সংস্থার (কলকাতা কেন্দ্র) বিজ্ঞানী গৌরাঙ্গ বিশ্বাসে জানিয়েছেন, ‘‘আবহাওয়া পরিবর্তন তো আছেই। এ ছাড়া পরিযায়ী শ্রেণির ইলিশ জলে তার গতিপথ পরিবর্তন করা এই অসময়ে প্রাপ্তির কারণ।” প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোমেন সাহুও জা্নিয়েছেন, ‘‘এ বছর প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় ইলিশের ঝাঁক অপেক্ষাকৃত লবণাক্ত জায়গার দিকে সরে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে গতিপথ পরিবর্তন করেছে।”

যদিও ভিন্ন মত পুরুলিয়া সিধু কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অসীম নাথের। তিনি বলছেন, ‘‘রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে যে পরিমাণ ছোট ইলিশ ছিল তারাই বড় হয়েছে। ডিম ছেড়ে যাওয়ার সময়ে ধরা পড়েছে।’’

আরো পড়ুন:

পেন্সিল ফেরত না পেয়ে পুলিশে নালিশ প্রাথমিকের শিক্ষার্থীর

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *