নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে যারা এমন কাজটি করেছেন তারা যতই শক্তিশালী হোক তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ। মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে পরীমনির সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, পরীমনি পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছেন, মামলাটি যেন সুষ্ঠুভাবে তদন্ত হয়। যারা পরীমনির সঙ্গে এই কাজটি করেছেন তারা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
হারুন বলেন, ঢাকা বোট ক্লাবে ঘটনার পর পরীমনি পুলিশ ও আইজিপি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু প্রযোজক সমিতি ও শিল্পী সমিতি সেই সুযোগটা করে দেয়নি। এটিই পরীমনির অভিযোগ ছিল।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মামলা রেকর্ড হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীমনি বলেছেন যে, পুলিশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে এবং এটাও বলেছেন যে, তিনি (পরীমনি) আইজিপির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কাছে আবেদনও করেছিলেন, কিন্তু তার (আইজিপি) কাছে যেতে পারেননি। এরপরেও আইজিপি স্যার ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানিয়েছেন এবং এরপর তাৎক্ষণিকভাবে আসামিদের গ্রেপ্তার করি।
বনানী থানার অভিযোগের বিষয়ে যুগ্ম-কমিশনার বলেন, ঘটনার রাতে ৪টায় বনানী থানায় গিয়েছিলেন পরীমনি, কিন্তু ওই সময় ওসি থানায় ছিলেন না। থানায় অসুস্থতা বোধ করার কারণে সাময়িকভাবে পরীমনি বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। ওই সময় পরীমনি দ্রুত থানা পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে চলে যান।
পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে পরীমনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তিনি (পরীমনি) এসে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং মামলার যাবতীয় বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
হারুন আরও বলেন, পুলিশ সব সময় চলচ্চিত্র সমিতি এবং যারা চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত আছেন সকলকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে। তাদের যেকোনো সমস্যায় পুলিশ এগিয়ে যাবে। মামলাটি শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে দেখভাল করবো, যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়। আমরা তাকে আশ্বস্তও করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ মামলায় যদি আরও আসামি থাকে তাহলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ঘটনা পরিকল্পিত কি না জানতে চাইলে হারুন বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হবে।
এদিকে পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে মাদক মামলায় সাতদিন করে ও গ্রেপ্তার বাকী তিনজন নারীকে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুপুরে বিমানবন্দর থানার মাদক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচ আসামিকে পুলিশ হেফাজতে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড চায় পুলিশ।
মামলায় আসামিরা হলেন- নাসির উদ্দিন মাহমুদ (৬৫), তুহিন সিদ্দিকী অমি (৩৩), লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)।