নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় হাট বসেছে চারা গাছের। বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা। যেন সবুজ বিপ্লবে নেমে পড়েছে উপকূলের মানুষ। বৃক্ষপ্রেমীরা পৌর শহরের এই হাট থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার চারা গাছ। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বিতরণ করছে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা। আর প্রতিযোগিতামূলক ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙিনাসহ পরিত্যক্ত জমিতে এসব গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছের হাট বসে। আর এই হাট থেকে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে চাম্বল, রেইন্ট্রি, মেহগনি, আকাশমনি, লেবু, আম, কাঁঠাল, মালটা, পেয়ারা, আমড়া ও কামড়াঙ্গা ইত্যাদি গাছের চারা। এছাড়া লাউ, বোম্বাই মরিচ ও বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের সবজির চারা বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। প্রকারভেদে গাছের চারাগুলো বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি হাটে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার গাছের চারা বিক্রি করছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেতে উপজেলার ১২ ইউনিয়নসহ দুটি পৌরসভার পাড়া-মহল্লায় যেন সবুজ বিপ্লব ঘটেছে। চারদিকে শুধুই সবুজের সমারোহ। কেউ বাড়ির উঠানে, আবার কেউ কেউ পরিত্যক্ত জমিতে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করছে। এছাড়া অনেকে আবার বাসা বাড়ির ছাদে বাগান গড়ে তুলেছেন। তবে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তৃণমূল পর্যায়ের রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করছে।
চারা গাছ বিক্রেতা সোহাগ হাওলাদার বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের চারা গাছ রোপণে আগ্রহ বেড়ে গেছে। ফলে প্রতি মঙ্গলবার এই হাটে গাছের চারা বিক্রি করতে আসি। এ বছর এখন পর্যন্ত এক থেকে দেড় লাখ চারা গাছ বিক্রি করেছেন। এসব চারা গাছগুলো স্বারুপকাঠিসহ বিভিন্ন নার্সারি থেকে ক্রয় করে ট্রলার যোগে এই হাটে নিয়ে আসা হয়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড কনসার্ন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা সমন্বয়কারী জেমস রাজিব বিশ্বাস বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলার বালিয়তলী, মহিপুর ও লতাচাপলী ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার সড়কের উভয়পাশে চার হাজার বনজ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। আর এসব গাছের চারা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে স্থানীয় ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ গাছই একদিন জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি জানান।
উদ্ভিদ বিজ্ঞান প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, একমাত্র গাছই পারে জীবন বাঁচাতে। তাই ব্যক্তি উদ্যোগে পরিত্যক্ত জমিতে প্রত্যেকের চারা গাছ রোপণ করা উচিত। বন বিভাগের কলাপাড়া উপজেলা ফরেস্ট অফিসার মো. আব্দুস সালাম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।