বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়েছে। এর মধ্যে ধর্ম অবমানা, ছেলেধরা, যমুনা সেতুতে কুকুরের রক্ত, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিখোঁজ, পদ্মা সেতুতে শিশুর মাথা লাগবে, করোনাভাইরাসসহ এমন অনেক গুজব বাংলাদেশে ছড়িয়েছে। তবে পদ্মা সেতু নিয়ে গুজবগুলো দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই গুজবকে কেন্দ্র করে মানুষ হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
তথ্যমতে, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরুর আগে থেকেই এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণে শিশুর মাথা লাগবে এমন গুজব সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু নির্মাণে একলাখ মানুষের মাথা লাগবে বলেও গুজব ছড়ানো হয়। গুজবে কান দিয়ে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ২১ জন গণপিটুনির শিকার হন। নিহত হয় পাঁচজন। এর মধ্যে রাজধানী বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনু (৪০) নামে এক মহিলাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। নেত্রকোনায় এক শিশুকে কলা কেটে হত্যা করে ব্যাগে ভরে মাথা নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। এ ছাড়া মোহাম্মাপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরেও ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে।
নির্মাণকাজের একেবারে শেষ পর্যায়েও সেতুতে ফেরি ও লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযানের ধাক্কা নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণের গুজবের সূত্রপাত ২০১৫ সালের ১ মার্চ নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপন কাজের উদ্বোধনের করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু সেই সময়ের পশুর রক্তের ছবি ২০৯ সালে হঠাৎ করে মানুষের রক্ত বলে প্রচার করে একটি মহল। এরপরই দেশে এ গুজব ছড়িয়ে পড়ে।