নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা, জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নোয়াখালীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী ফেনী শাখার তিন কর্মকর্তাকে ৩১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ৮৪ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে জেলা জজ আদালতের স্পেশাল জজ (জেলা জজ) এএনএম মোর্শেদ আলম এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার ম্যানেজার মো. রহিম উল্যাহ খন্দকার, শাখার দ্বিতীয় কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম ও সহকারী অফিসার মো. মিজানুর রহমান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সাব রেজিস্ট্রার মতিগঞ্জ, সোনাগাজীর দলিল রেজিস্ট্রিতে ব্যবহৃত ও সরকারি খাতে জমার জন্য সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ২০-২৫টি বান্ডিল একত্রে চালানে পে-অর্ডার নম্বর, টাকা ও তারিখ উল্লেখ করে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন জমাকৃত ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ১৬৫ টাকার ১৬৬টি পে-অর্ডার সরিয়ে রেখে পরবর্তীতে নগদে উত্তোলন, পে-অর্ডারের টাকার অংক বাড়িয়ে নগদে উত্তোলন ও সরকারি খাতে জমার জন্য চালানের সঙ্গে ফেরত আসা পে-অর্ডার নিজেদের কাছে রেখে পরস্পরের যোগসাজশে নিজেরা গ্রাহকের ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
পরে এ ঘটনায় দুদক নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম সরকার বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সোনাগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন দুদক নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমানকে।
মামলা পরিচালনাকারী দুদকের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল কাশেম জানান, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যাংকের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ৪০৯, ৪২০, ৪৭১ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ এর ২ ধারায় প্রত্যেককে ৩১ বছর করে কারাদণ্ড ও ২৮ লাখ করে মোট ৮৪ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে বিজ্ঞ স্পেশাল জজ এএনএম মোর্শেদ আলম এ রায় প্রদান করেন। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন ও মো. আব্দুল হক।
তিনি আরও জানান, এ রায় বাংলাদেশের সকল দুর্নীতিবাজদের জন্য একটি মেসেজ। এরকম রায়ের মধ্য দিয়ে দেশের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এমন রায়ের প্রয়োজন আছে।
আরো পড়ুন: