মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির তৃতীয় মৃত্যবার্ষিকী আজ। ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত সেই মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে অনেকে ভুলে গেলেও তার মর্মান্তিক মৃত্যুর দিনটিকে পরিবারের সঙ্গে মনে রেখেছে পিবিআই। নুসরাতের মৃত্যবার্ষিকীতে তার কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়ে স্মরণ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রবিবার বিকেলে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি দল নুসরাতের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়।
এ সময় কবর জিয়ারতে অংশ নেন নুসরাত জাহান রাফির বাবা মাওলানা এ বি এম মুছা, বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও পিবিআই সদস্যরা। মোনাজাত পরিচালনা করেন হামিদিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নজরুল ইসলাম।
কবর জিয়ারত শেষে পিবিআই কর্মকর্তারা নুসরাতের বাবা ও ভাইকে সান্ত্বনা দেন। তারা নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে তার মা শিরিনা আখতারের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এর আগে সকালে নুসরাতের নিজ বাড়িতে পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়।
নুসরাতের বড় ভাই ও মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘আমরা মহান আল্লাহর দরবারে আমার বোনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমরা শুনেছি আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। শিগগিরই উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি শুরু হবে। উচ্চ আদালতের কাছেও আমরা ন্যায়বিচারপ্রত্যাশী। ‘
২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল সকালে ভবনের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। চার দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
এর আগে ৮ এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটিতে মাত্র ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্ততর্ক গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ২৪ অক্টোবর রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন।